মেদিনীপুর: সদ্য বিজেপির রাজ্য কমিটির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এরপরই শনিবার প্রকাশ পেয়েছে সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও পর্যবেক্ষকদের নামের তালিকা। যা সামনে আসতেই দলের অন্দরে ক্ষোভের সঞ্চারের অভিযোগ উঠছে। এ নিয়ে প্রকাশ্য সরবও হচ্ছেন অনেকেই। তবে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ এসবকে খুব একটা আমল দিতে নারাজ। বরং তিনি মনে করেন, নতুনদের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়াটা সব দলে দেখা যায় না। এটা বিজেপিই একমাত্র পারে।
শনিবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুরে দলীয় এক কর্মসূচিতে যোগ দিতে যান দিলীপ ঘোষ। সেখানেই নতুন কমিটি নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, “একমাত্র বিজেপিতেই নতুনদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। অন্য দলে এটা দেখা যায় না। বিজেপিতে সবসময় নতুন মুখই আসে। পুরনোরা অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে যান। অন্যরকম দায়িত্ব সামলান। যাঁদের অভিজ্ঞতা হয়েছে। তাই সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়েই সভাপতি বদল হয়েছে। বেশির ভাগ জেলাতেই এই বদল হয়েছে। গত কয়েক বছরে বহু সদস্য দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, নতুন দায়িত্ব দেওয়া হবে তাঁদেরও।”
কিন্তু দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির মতের সঙ্গে যে সকলে একমত হচ্ছেন তেমনটা একেবারেই নয়। সে কারণেই দলের অন্দরে কিছুটা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের। শনিবারই জানা গিয়েছে, পাঁচ বিজেপি বিধায়ক দলীয় বিধায়কদের যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তা ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন।
এই তালিকায় রয়েছেন গাইঘাটা বিধানসভার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর, বনগাঁ উত্তর বিধানসভার বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া, হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার, কল্যাণীর বিধায়ক অম্বিকা রায় এবং রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী। জানা গিয়েছে, এই পাঁচ বিধায়কের সরে যাওয়ার মূল কারণ, মতুয়া সম্প্রদায়কে নতুন কমিটি থেকে যথাযথ গুরুত্ব না দেওয়া।
এর আগে রাজ্য কমিটির নতুন তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর একটি টুইট করেন সায়ন্তন বসু। তিনি লেখেন, “আমি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। দিলীপ ঘোষ ও সুকান্ত মজুমদারের প্রতিও আমি কৃতজ্ঞ। শেষ ছ’বছর ধরে আমি দলের প্রতি যে দায়িত্ব পালন করে, আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমি আশা করছি, আগামী দিনে নতুন টিম দলকে নতুন জায়গায় পৌঁছে দেব।” এরপরই বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যান সায়ন্তন বসু। পরে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটাই তো স্বাভাবিক। রাজ্য কমিটিতে না থাকলে, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে থাকাটা তো নৈতিক নয়। তাই ওই গ্রুপ থেকে বেরিয়ে গিয়েছি।”
এদিকে বিজেপির মিডিয়া সংক্রান্ত বিষয়ে যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ সেখান থেকে শনিবারই বেরিয়ে যান রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রুপ লেফট করেন শীলভদ্র দত্ত, দাবি সূত্রের। রাজনৈতিক মহলের দাবি, দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি নতুনদের কাজের সুযোগ করে দেওয়ার তত্ত্ব আওড়ালেও তা যে দলের সমস্ত স্তরের সদস্যরা মেনে নিচ্ছেন, এমনটা ভেবে নেওয়া কোনওভাবেই সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন: Bengal BJP: বিজেপিতে বাড়ছে ‘লেফট’! এবার ছাড়লেন পাঁচ বিধায়ক, বেরিয়ে গেলেন শীলভদ্র-রাজুও