চন্দ্রকোণা: মাথার ওপর গনগনে রোদ, ঝলসে যাচ্ছে চামড়া, তবুও চাতকের মতো ওঁরা দাঁড়িয়ে তাল গাছের নীচে। যদি কয়েক ফোঁটা পান! তীব্র দাবদাহের মাঝে ভিড় বাড়ছে তাল গাছের তলায় তাল রস খেতে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা শহরের অনতিদূরে গ্রামীণ এলাকায় এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা তাল গাছ গুলির তলায় এখন উপচে পড়ছে ভিড়। কারোর বয়স চল্লিশ, কারোর ষাট, তবে বেশিরভাগেরই বয়স ত্রিশ থেকে পঁয়ত্রিশের মধ্যেই। বাইক কিংবা সাইকেলে পাড়ি দিয়ে শহর ছেড়ে তাঁরা এসেছেন এক চুমুক তালের রসের জন্য।
এই প্রচণ্ড গরমে এর থেকে ভাল স্বস্তি আর অন্য কিছুতেই নেই। ফুরফুরে হাওয়া আর অল্পস্বল্প ঝিমঝিমানি নেশায় জমে ওঠে তালরসে। তবে রসের হাঁড়ি গাছ থেকে নামতেই শুরু হয়ে যাচ্ছে কাড়াকাড়়ি। এককথায় গরম পড়তেই তালের রসসেবনের এ দৃশ্য় বেশ মধুর। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা বিভিন্ন এলাকায় অলিগলিতে, বন্ধুদের আড্ডা কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, ‘চল তাল রস খেয়ে আসি…’ বিদেশি লিকার তো প্রচুর দাম, এই গরমে টুক করে তালরস সেবন করলেই অনেকটা স্বস্তি।
অনেকে আবার এই নিয়ে ব্যবসাও শুরু করেছেন। পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে অনেকে গিয়ে তাল রস সংগ্রহ করে মাঠে তাঁবু খাটিয়ে ব্যবসা শুরু করেছেন। তাঁদেরই একজনের বক্তব্য, “এই রস শরীরের জন্য ভাল,আর আমাদেরও কিছুটা আয় হচ্ছে।”
বাঁকুড়ার গরম আজ ৪৪ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা সকলের। গাছের গোড়ায় হ্যালান দিয়ে বসে তাড়ি সেবনের যে কী সুখ, তা কেবল প্রকাশ পাচ্ছে তাঁদের চোখে মুখেই।