পশ্চিম মেদিনীপুর: গায়ে হলুদের পর্ব শেষ। সানাই বাজছে, বিয়ের দিন সকালের খাওয়ারও খেয়ে নিয়েছেন অতিথিরা। বিয়ের গন্ধ ম ম করছে বাড়িতে। আচমকাই বিয়েবাড়িতে বড় অতিথি। বাড়ির দরজায় কড়া নাড়ল পুলিশ! কিন্তু কেন? পাত্রীর খোঁজ করছিলেন পুলিশ। অতিথিরা তো হতভম্ব। কী ব্যাপার, ঠাওর করতে পারছিলেন না কেউ। পাত্রীর বাবা ততক্ষণে বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছিলেন। ঘাটাল মহকুমার চন্দ্রকোণার বাঁকা সুলতানপুরে মাঝি পাড়ায় বিউটির বিয়ে রুখল পুলিশ। কারণ সে এখনও নাবালিকা।
চন্দ্রকোণার বাঁকা সুলতানপুরের বিউটি সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী, বয়স মাত্র ১৫। কিন্তু দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিতে চেয়েছিলেন বাবা-মা। সেই মোতাবেক পাত্রের খোঁজখবরও শুরু করেছিলেন। পাশের গ্রামেরই পাত্রের খোঁজ মেলে। তারপরই জলদি কথাবার্তার পর্ব মিটিয়ে সোজা বিয়ের পিঁড়িতে মেয়ে।
মঙ্গলবার ছিল বিয়ে। ইতিমধ্যেই ঘটনার খবর যায় চন্দ্রকোণা এক নম্বর ব্লকের বিডিও রথীন্দ্রনাথ অধিকারীর কাছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ প্রশাসন ব্লকের প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে যান বাঁকা সুলতানপুর গ্রামে।
প্রশাসনিক কর্তারা যতক্ষণে বিয়ে বাড়িতে ঢোকেন, অতিথিরা হাজির। কিন্তু পুলিশ দেখে ততক্ষণে পালিয়েছেন আবার অনেকেই। বিডিও বিউটির বাবা রবীন্দ্রনাথ মাঝির সঙ্গে কথা বলেন। বিয়ে বন্ধ করার নির্দেশও দেন।
বাড়ির লোকদের কাছ থেকে মুচলেখা লিখে নেওয়া হয় ১৮ বছর না হলে মেয়ের বিয়ে দেওয়া হবে না। এমনকি প্রশাসনের তরফে সতর্কও করা হয়, পালিয়ে গিয়ে যদি বিয়ে করে, তাহলেও ব্লক প্রশাসনের তরফে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। বিডিও রথীন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, “বিউটি যাতে পড়াশোনা করে, চেষ্টা করা হবে বিউটি যে স্কুলে পড়াশোনা করত, আমরা সেই স্কুলের শিক্ষিকাদের সঙ্গে কথা বলব।” ব্লক প্রশাসন বিউটির পড়াশুনার ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।