কেশপুর: পঞ্চায়েত নির্বাচনের জেরে তুঙ্গে প্রস্তুতি। জমি শক্ত করতে মহিলা শাসক-বিরোধী দুই শিবির। এমন আবহের মধ্যে প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতিকে সামনে রেখে শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজি করার অভিযোগ। বোমের আঘাতে হাতের আঙুল উড়ে গেল দলের এক কর্মীর।
গোটা রাজ্যে জুড়ে বারংবার প্রকাশ্যে এসেছে শাসকদলের কোন্দল। খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং একাশ নেতারা একাধিকবার নির্দেশ দিয়েছেন একসঙ্গে মিলেমিশে কাজ করার কথা। তবে সেই কথা যে নীচু তলার কর্মীরা কর্ণপাত করছেন না তা আরও একবার সামনে এল কেশপুরের এই ঘটনায়।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে কেশপুরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছিল। সেই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে এলাকায় একটি মিছিলের ডাক দেওয়া হয়। তখনই হঠাৎ তৃণমূল কর্মীদেরই লক্ষ করে বোমাবাজি করে অপর গোষ্ঠীর লোকজন। বোমার আঘাতে জখম হন এক তৃণমূল কর্মী। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় আসে পুলিশ বাহিনী।
এই বিষয়ে পুরনো এক তৃণমূল কর্মী বলেন, ‘আমরা একসময় সিপিএম জমানায় লড়াই করে প্রাণের বাজি রেখে দল করেছি। এখন একজন প্রমোটার বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত। সে নাকি সভাপতি হবে। এর আগে কোনও দিন এখানে গোষ্ঠী কোন্দল ছিল না।’
অপরদিকে কেশপুরের তৃণমূলের জেলার কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, ‘দূর থেকে কেউ একজন বোমা ছুড়েছিল। তাতেই আঙুল উড়ে গিয়েছে। এখানে কোনও গোষ্ঠী কোন্দল নেই।’
ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি বলেন, ‘তোলাবাজি ঘিরে যত গন্ডগোল। যে যত তোলা তুলে ওদের উপর নেতৃত্বকে দিতে পারবে তারাই বড় নেতা হয়। তাই যারা এতদিন ধরে দল করছিল তাদের দাম নেই। যারা এখন বেশি তোলাবাজি করতে পারছে তাকেই নেতা বানিয়েছে। সেই নিয়েই গন্ডগোল। কয়েকদিন আগে ওদের বিধায়ক শিউলি সাহা বলেছিলেন কোনও গন্ডগোল বরদাস্ত করা যাবে না। কিন্তু ওরা কোনও কথাই শোনে না।’
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে কেশপুরে বারবার শাসকদলের কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। অতিসম্প্রতি কেশপুর কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই সকল ঘরোয়া কোন্দল মেটাতে মেদিনীপুরে বৈঠকে বসে শাসকশিবির। জেলা তৃণমূলের কো অর্ডিনেটর অজিত মাইতির নেতৃত্বে বৈঠক চলে রাত ১১টা পর্যন্ত। সেই বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগেই দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দেন কেশপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শিউলি সাহা। মন্ত্রীর দাবি, দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ-বিক্ষোভ অভিমান থাকলে তা জানাতে হবে দলের ফোরামেই। দলে থেকে দলের বিরোধিতা বরদাস্ত করা হবে না বলেও জানান তিনি। এরপর ফের প্রকাশ্যে এল উভয়ের মধ্যে কোন্দল।