শালবনি: তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ নতুন নয়। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জিতে তৃতীয়বারের জন্য বাংলার ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। সংগঠন যত বেড়েছে, তত প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের চিত্র। আর এবার শালবনিতে তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচিতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বার বার বুঝিয়ে দিলেন, জেলাস্তরের কোথায় কী হচ্ছে, সেই সব খবর তিনি রাখেন। কোথায় কোথায় সমস্যা রয়েছে, এলাকা ধরে ধরে এদিন বললেন মমতা। যেমন জুন মালিয়ার প্রসঙ্গ টেনে জানালেন, জুন এলাকায় ঘোরেন। বললেন, ‘জুন আমাদের সাংস্কৃতিক মঞ্চের মেয়ে। খুব পপুলার মেয়ে।’ আর সেই কথা বলেই দলের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরাকে সতর্ক করে দেন তিনি। জেলা সভাপতির নাম করে বললেন, ‘সুজয় জুনের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করবে। আমাকে বাধ্য কোরো না কোনও ব্যবস্থা নিতে।’
শুধু জুন মালিয়া ও সুজয় হাজরার প্রসঙ্গই নয়, এদিনের বৈঠকে আরও অনেকের নামই উঠে আসে মমতার মুখে। এই যেমন, কেশপুরে শিউলি সাহার সঙ্গে কিছু সমস্যার কথাও যে তাঁর কানে গিয়েছে, সেই কথাও বললেন মমতা। সেই সমস্যা যাতে মিটমাট করে নেওয়া হয়, সেই কথাও বললেন। তারপর দলের দীর্ঘদিনের নেতা অজিত মাইতিকে যে আজকাল দলেরই একাংশ বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে না, সেই অভিযোগও গিয়েছে মমতার কাছে। বললেন, ‘অজিত মাইতি অনেক পুরনো। আমার দলের অনেক দিনের সহকর্মী। কেউ কেউ এখন আবার অজিতের কথা শোনে না, পাত্তাও দেয় না। আর অজিতেও দোষ আছে, একটু গ্রুপিজ়ম করার। এগুলো বন্ধ করো। আস্তে আস্তে ভাল করে কাজ করো। তোমাকে সবাই মানবে।’
এদিকে আবার রাজ্যের মন্ত্রী তথা সবংয়ের বিধায়ক মানস ভুইঞার কাজকর্ম নিয়েও খুব একটা সন্তুষ্ট নন মমতা। তাঁর বক্তব্য, মন্ত্রীর সবকিছুই সবং-কেন্দ্রিক। বললেন, ‘মানসদা শুধু সবং করলে চলবে? শুধু সবংয়েই মাদুরকাঠি, স্ট্যাচু, সুইমিং পুল, সবংয়েই সব… আরে জেলাটা তো আপনার। আপনি বাংলার মন্ত্রী।’ সেই কথা বলেই মমতা জানালেন, আগামীতে একটি ‘মাদুর ক্লাস্টার’ তৈরি হবে এবং সেটি তৈরি হবে সবং, পিংলা ও ডেবরার মাঝামাঝি কোথাও। যাতে তিনটি জায়গার মানুষেরই সুবিধা হয়।