কেউ কথা রাখেনি: দাদুও শুনেছিলেন, নাতিও শুনছেন কংক্রিট হবে, আজও বাঁশের সাঁকোয় দুলছে ঘাটালবাসীর জীবন

শাসক আসে শাসক যায়, থেকে যায় নড়বড়ে সাঁকো আর তাঁদের বাস্তবায়িত না হওয়া প্রতিশ্রুতির কথা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কথা রাখেনি কেউই।

কেউ কথা রাখেনি: দাদুও শুনেছিলেন, নাতিও শুনছেন কংক্রিট হবে, আজও বাঁশের সাঁকোয় দুলছে ঘাটালবাসীর জীবন
নিজস্ব ফটো
Follow Us:
| Updated on: Mar 12, 2021 | 8:55 PM

পশ্চিম মেদিনীপুর: ভোট এলেই ক্ষমতাসীন থেকে বিরোধী দল, প্রতিশ্রুতির ঝড় তোলে সবাই। নির্বাচনের আগেই শোনা যায়, নড়বড়ে বাঁশের সেতু পার করে কষ্টের যাতায়াত শেষ হবে। ভোট আসে, ভোট যায়, দাদু শুনেছেন, নাতিও শুনেছেন কংক্রিটের ব্রিজ হবে। কিন্তু সেই ব্রিজ আজও চক্ষুষ করতে পারলেন না কেউই।

ঘাটালের দাসপুর বিধানসভা এলাকা। সেখানে রয়েছে শিলাবতী নদীর ওপর সংযোগকারী বাঁশের সাঁকো। শুকনো দিনে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করেন স্থানীয়রা। আর বর্ষা এলেই ভেঙে যায় সেই সাঁকো। জলে ভাসে পশ্চিম মেদিনীপুরের নিচ নাড়াজোল। যাতায়াত দুর্বিষহ হয়ে ওঠে এলাকাবাসীর। দাবি ওঠে কংক্রিটের ব্রিজের। প্রতিশ্রুতি মেলে, হয়ে যাবে। নির্বাচন এলে সেই প্রতিশ্রুতির বাণী আরও জোরাল হয়। তবে নির্বাচন মিটলেই কারও দেখা মেলে না বলে অভিযোগ। শাসক আসে শাসক যায়, থেকে যায় নড়বড়ে সাঁকো আর তাঁদের বাস্তবায়িত না হওয়া প্রতিশ্রুতির কথা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কথা রাখেনি কেউই।

বছর বছর পশ্চিম মেদিনীপুরের তিন বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটাররা শুনে আসছেন এবারেই হয়ে যাবে ব্রিজ তৈরির কাজ। সেই প্রতিশ্রুতি শুনতে শুনতেই সাঁকো দিয়ে হয় প্রতিদিন সাইকেল, মোটরবাইক, গাড়ির অবাধ যাতায়াত। এদিকে প্রতি বর্ষায় সাঁকো ভেঙে পড়ে। তখন নৌকাই যাতায়াতের একমাত্র উপায়। সেখানে পারাপার খরচ পড়ে ২০ থেকে ৫০ টাকা। আজও কংক্রিটের সেতুর দাবি করে আসছেন এলাকাবাসী। কিন্তু কেউ জানেন না কবে হবে সেই কাজ। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছ থেকে এলাকার কোনও ব্যক্তিকে টেন্ডার দেওয়া হয়। তারপরও পাকা সেতু হচ্ছে না। প্রশান্ত মল্লিক নামে এক স্থানীয়ের কটাক্ষ, “যখনই বন্যা হয়, জল বেড়ে যায় নদীতে, পারাপারে খরচ হয় ২০ থেকে ৫০ টাকা। তার পর ক্ষমতায় যেই আসে প্রতিশ্রুতি দেন ব্রিজ করে দেব। এটাই শুনে আসছি সেই বাম আমল থেকে। তৃণমূল আমলও গেল, এবার যারাই আসুক তারা সেই প্রতিশ্রুতিই দেবে।” একরাশ ক্ষোভ ঝরে পড়ে তাঁদের কথায়।

আরও পড়ুন: ভোট হওয়ার আগেই একটি কেন্দ্রে জয়ের আশা দেখছে বিজেপি

ভোটের মরসুমে এ নিয়েও শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজা। দাসপুরের তৃণমূল প্রার্থী মমতা ভুঁইয়ার কথায়, আমার ঘাটাল চন্দ্রকোণা বিধানসভার অন্তর্গত না হলেও ব্রিজেপর কাজ শুরুর তোড়জোড় শুরু হয়েছিল। তখন বিজেপিই করতে দেয়নি। এদিকে বিজেপি নেতা রাজু আড়ির আবার আঙুল তুলেছেন পূর্বতন বাম সরকারের দিকে। তৃণমূলের আমলেও ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করতে পারেনি বলে মন্তব্য করেন। তবে এই নির্বাচনে জিতে ডবল ইঞ্জিনের সরকারই মানুষের প্রত্যাশা পূর্ণ করবে বলে দাবি করেন তিনি।