গড়বেতা: পঞ্চায়েত ভোট পরবর্তী সময়ে জায়গায় জায়গায় বিরোধীদের উপর আক্রমণের অভিযোগ উঠে আসছে। আর এরই মধ্যে আরও এক বিস্ফোরক অভিযোগ পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতায়। অভিযোগ, এক বিজেপি কর্মীকে তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করেছে দুষ্কৃতীরা। বিজেপির দাবি, দুষ্কৃতীরা প্রত্যেকেই তৃণমূল আশ্রিত। পদ্ম শিবিরিরে আরও গুরুতর জখম অবস্থায় ওই বিজেপি কর্মী যখন জল চাইছিল, তখন তাঁর গায়ে প্রস্রাব করে দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র রাজনৈতিক চাপানউতর তৈরি হয়েছে এলাকায়। যদিও এই ধরনের অভিযোগের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই বলেই দাবি শাসক দলের জেলা কোঅর্ডিনেটর অজিত মাহাতর। তবে বিজেপি এই অভিযোগটিকে হাতিয়ার করে সুর চড়াতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই।
বিজেপির দাবি, ওই ব্যক্তি তাঁদের দলীয় কর্মী এবং এবারের পঞ্চায়েত ভোটে পোলিং এজেন্টও ছিলেন। বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বের অভিযোগ, শুক্রবার সন্ধেয় ওই বিজেপি কর্মীকে তুলে নিয়ে যায় একদল দুষ্কৃতী। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে দাবি বিরোধীদের। এরপর তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, যখন তিনি সংজ্ঞাহীন হওয়ার পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন, তখন তিনি জল চাইলে, তাঁর মুখে প্রস্রাব করে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ বিজেপির। পদ্ম শিবিরের দাবি, দুষ্কৃতীরা প্রত্যেকেই মদ্যপ অবস্থায় ছিল।
কিন্তু কেন এই ঘটনা ঘটল? বিজেপির দাবি, তৃণমূলের বিজয় মিছিল চলছিল এলাকায়। সেই সময় ওই বিজেপি কর্মীর কাছে ‘ফিস্ট’ করার জন্য টাকা চাওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। বিজেপির বক্তব্য, ওই ব্যক্তি অত্যন্ত গরিব পরিবারের লোক। টাকাল দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না। অভিযোগ, সেই কারণেই তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়েছে।
এদিকে ওই বিজেপি কর্মীকে গুরুতর জখম অবস্থায় গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। বিজেপির রাজ্য সহসভাপতি সমিত দাসের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল আহত দলীয় কর্মীর সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন শনিবার। যদিও এই ঘটনাকে একপ্রকার পারিবারিক বিবাদ বলেই দাবি করছেন তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতি। তাঁর বক্তব্য, ‘এসব সম্পূর্ণ মিথ্যা। ভোট তো কবে মিটে গিয়েছে, আজ কেন তুলতে যাবে? আষাঢ়ে গল্প ফাঁদছে। পাড়ার গন্ডগোল, নাকি গ্রামের গন্ডগোল, নাকি ভাইয়ে ভাইয়ে গন্ডগোল, সেসব তলিয়ে না দেখেই বলা হচ্ছে তৃণমূল জড়িয়ে। এসব করে প্ররোচনা ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে।’