কপালে ভাঁজ ফেলছে কৃ্ষ্ণ ছত্রাক! আসানসোলে সংক্রমিত এক কোভিডজয়ী

tista roychowdhury | Edited By: সোমনাথ মিত্র

May 27, 2021 | 5:46 PM

রাজ্য় স্বাস্থ্য় দফতর সূত্রে খবর,  বুধবারের নতুন করে রাজ্যে মিউকরমাইকোসিসে (Mucormycosis) আক্রান্তের মোট সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৩। অন্যদিকে, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে (Black Fungus) মৃত এমন সন্দেহভাজনের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩। আসানসোলের এই আক্রান্তকে নিয়ে সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়ায় ১৪।

কপালে ভাঁজ ফেলছে কৃ্ষ্ণ ছত্রাক! আসানসোলে সংক্রমিত এক কোভিডজয়ী
ফাইল চিত্র।

Follow Us

পশ্চিম বর্ধমান: ক্রমশই চিন্তা বাড়াচ্ছে কৃষ্ণ ছত্রাক ওরফে মিউকরমাইকোসিসের (Mucormycosis) সংক্রমণ। বঙ্গে করোনার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মিউকরমাইকোসিসের সংক্রমণ। বুধবারই উত্তরবঙ্গে এক ব্যক্তির মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে।এ বার মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত হলেন আসানসোলের এক বছর চল্লিশের মহিলা। তিনি আসানসোল চিত্তরঞ্জনের বাসিন্দা।

আসানসোল জেলা হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত ১৬ মে ওই মহিলা করোনা আক্রান্ত হয়ে চিত্তরঞ্জন কে জি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। কিছুদিন আগে তিনি কোভিডমুক্ত হন। তারপর থেকেই তাঁর চোখের তলায়, নাকে মুখে কালো ছোপ পড়তে শুরু করে। জানা গিয়েছে, ওই মহিলা বহুমূত্র রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসকেরা অনুমান করেন, ওই মহিলা মিউকরমাইকোসিসে (Mucormycosis) আক্রান্ত। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁর নমুনা পরীক্ষার জন্য ভিআরডিএল ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার সকালে, রিপোর্ট আসে ওই মহিলা মিউকরমাইকোসিসে (Mucormycosis) আক্রান্ত। এদিনই তাঁকে আসানসোল জেলা হাসপাতাল থেকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়।

আসানসোলের হাসপাতাল সুপার বলেন, “আসানসোলে এই প্রথম মিউকরমাইকোসিসে সংক্রমিত কাউকে পাওয়া গেল। এটিই আমাদের প্রথম কেস। ওই মহিলা আপাতত স্থিতিশীল আছেন। তাঁকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে পাঠানোর ব্যবস্থা করছি। এ বিষয়ে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাও হয়েছে।”

গ্রাফিক্স- অভীক দেবনাথ

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দাবি, মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস (Black Fungus) মূলত দূর্বল অনাক্রম্য ব্যক্তির দেহে বাসা বাঁধে। অর্থাৎ, যে ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাঁর দেহেই বাসা বাঁধতে পারে এই মারণ ছত্রাক। মূলত কোভিডজয়ী রোগীদের দেহে প্রতিরোধক ক্ষমতা কম থাকে। তাই সহজেই বাসা বাঁধতে পারে এই ছত্রাক। দীর্ঘদিন রোগীকে আইসিউতে রেখে চিকিৎসা করানো, বহুমূত্র রোগ থাকলে, কোমর্বিডিটি হলে এই ছত্রাক সংক্রমণ ঘটতে পারে বলেই দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা। সিডিসি বলছে, মূলত, মিউকর ও রাইজোপাস জাতীয় ছত্রাক প্রজাতি এই সংক্রমণের জন্য দায়ী। মৃত প্রাণীর দেহ, পচে যাওয়া উদ্ভিজ্জ থেকে মূলত এই ছত্রাক জন্ম নেয়। আপাতভাবে এই ছত্রাক ক্ষতিকারক না হলেও শরীরের অনাক্রম্যতা কমে এলেই ভয়াবহ ক্ষতি করতে পারে।

রাজ্য় স্বাস্থ্য় দফতর সূত্রে খবর,  বুধবারের নতুন করে রাজ্যে মিউকরমাইকোসিসে (Mucormycosis) আক্রান্তের মোট সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৩। অন্যদিকে, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে (Black Fungus) মৃত এমন সন্দেহভাজনের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩। আসানসোলের এই আক্রান্তকে নিয়ে সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়ায় ১৪। ফলে করোনাকালে মিউকরমাইকোসিসের মোকাবিলাতেও তৈরি হচ্ছে স্বাস্থ্যদফতর। মিউকরমাইকোসিস মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী ও স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যে-সহ জনস্বাস্থ্য শাখার আধিকারিকরা ইতিমধ্যেই একাধিক বৈঠক সেরেছেন। সংক্রমণের গ্রাফ দেখে সব রাজ্য সরকারকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক নির্দেশ দিয়েছে, মিউকরমাইকোসিসকে (Mucormycosis) মহামারী আইনের আওতায় এনে ‘নোটিফায়েবল ডিজ়িজ়’ বলে ঘোষণা করা হোক। ইতিমধ্যেই এই বিরল প্রজাতির সংক্রমণের সংখ্যা দেশে ১১ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। বর্তমানে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি গুজরাট এবং মহারাষ্ট্রে।

আরও পড়ুন: বঙ্গের বিপদ ব্ল্যাক ফাঙ্গাস! উত্তরবঙ্গে আক্রান্ত আরও ১

 

Next Article