‘পোস্টার প্রতিবাদ’! বিতর্কের শিরোনামে ‘শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ’ কাউন্সিলর

tista roychowdhury |

Jun 18, 2021 | 11:04 AM

স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ বরাবর শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অসীম দলে থাকাকালীন তৃণমূলের হয়ে কোনও কাজ করেননি। অভিযোগ, শুভেন্দু দল ছেড়ে চলে যাওয়ার পর দলবিরোধী কাজ করতেন অসীম। এরপরেই তৃণমূলের তরফে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার হয়।

পোস্টার প্রতিবাদ! বিতর্কের শিরোনামে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলর
অসীম অধিকারী ও তাঁর বিরুদ্ধে পোস্টার , নিজস্ব চিত্র

Follow Us

উত্তর দিনাজপুর: একুশের নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকেই দল বদলের হিড়িক উঠেছে। একের পর এক বেসুরো হচ্ছেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। মুকুল রায় তৃণমূলে (TMC) যোগদানের পরেই দল ছাড়তে একরকম প্রস্তুত একাধিক বিজেপি বিধায়ক। পাল্টা প্রতিবাদস্বরূপ পোস্টার বিতর্কেও জড়িয়েছেন অনেকে। এ বার সুর বদলাতে শুরু করলেন ‘শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ’ রায়গঞ্জের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের পৌরমুখ্য অসীম অধিকারী। অসীমের এই ‘বেসুর’ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর বিরুদ্ধে পোস্টারে ছেয়ে গেল রায়গঞ্জ।

অসীমবাবুর বিরুদ্ধে যে পোস্টার দেওয়া হয়েছে তাতে লেখা রয়েছে, “রায়গঞ্জ বিধানসভা আসনে হারের কাণ্ডারী বহিষ্কৃত কাউন্সিলর দাদার অনুগামীদের দলে নেওয়া চলবে না, চলছে না।” কে বা কারা এই পোস্টারের নেপথ্য়ে রয়েছে তা স্পষ্ট না হলেও বিজেপির দাবী, তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এই পোস্টার দেওয়া হয়েছে। যদিও বিজেপির (BJP) এই অভিযোগ পুরোপুরি স্বীকার করেনি তৃণমূল। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রায়গঞ্জ জুড়ে এই পোস্টার পড়েছে। নিশানায় যে পৌরপ্রধান অসীম অধিকারী রয়েছেন তাও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ বরাবর শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অসীম দলে থাকাকালীন তৃণমূলের হয়ে কোনও কাজ করেননি। অভিযোগ, শুভেন্দু দল ছেড়ে চলে যাওয়ার পর দলবিরোধী কাজ করতেন অসীম। এরপরেই তৃণমূলের তরফে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার হয়। নির্বাচন আবহে অসীম বিজেপিতে যোগ দেন। নিজেকে ‘দাদার অনুগামী’ বলা অসীম ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই সুর বদলাতে শুরু করেন। তৃতীয়বারের জন্য জয়ী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা করার পাশাপাশি শাসকদলের অধীনস্ত রায়গঞ্জ পুরসভা ও পৌরপিতার সুনাম করতেও শুরু করেন অসীম। আর এতেই জোরাল হয়ে ওঠে তাঁর দলবদলের জল্পনা। বৃহস্পতিবার সকালে এরই প্রতিবাদে পোস্টার দেখা যায় রায়গঞ্জে।

জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র সন্দীপ বিশ্বাস বলেন, “পোস্টার দেওয়ার মধ্যে আমি খারাপ কিছু দেখি না। এটা গণতান্ত্রিক দেশ। নিজের মতপ্রকাশ করা গণতন্ত্রের অংশ। তাছাড়া দলে কে যোগ দেবেন কে দেবেন না তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় ঠিক করবেন। এ বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারব না। যে কেউ চাইলেও দলে যোগ দিতে পারবে না।” জেলা বিজেপি সভাপতি বাসুদেব অধিকারী বলেন, “অসীমবাবু নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। ওঁ সুরেই আছেন। বেসুরো নন। কে বা কারা পোস্টার দিয়েছে তাও তো জানা নেই। অসীমবাবু বুথেও আসছেন। দলের এ বিষয়ে কিছু বলার নেই।”

ঘটনায়, কাউন্সিলর অসীম অধিকারী বলেন, “কে পোস্টার লাগিয়েছে আমি জানি না। এ বিষয়ে কিছু বলার নেই। সবাই বলেছে আমি দুর্নীতি করেছি। আমার এলাকায় তিনশো ঘর হয়েছে। একজনও যদি বলে কোনও টাকাপয়সা নেওয়া হয়েছে তবে আমি সেই দোষ মাথায় করে নেব। আমি চার বছর মা-মাটি-মানুষের হয়ে কাজ করেছি। আমার ব্যক্তিগত শত্রু আজ থেকে নয় বছর পনের-কুড়ি ধরে রয়েছে। তারাই এই কাজ করেছে।”

তবে, এর আগে তৃণমূল কর্মীদের মারধর করা বিশৃঙ্খলা ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন বিজেপি পৌরমুখ্য। এমনকী তাঁর জেল হেফাজতও হয়েছিল। উল্লেখ্য, রায়গঞ্জের কাউন্সিলরের পাশাপাশি কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়র দলবদল নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। যদিও, সৌমেন জানিয়েছেন তিনি বিজেপিতেই আছেন।

আরও পড়ুন: ‘চরিত্রহীন বিশ্বজিৎ’, মহিলাদের মানহানির অভিযোগে পোস্টার! বিতর্কে বিজেপি বিধায়ক

 

 

 

 

Next Article