
কাটোয়া: বাংলাদেশের নাগরিক। অথচ ভারতীয় পাসপোর্টে কুয়েতে গিয়েছেন। কীভাবে? পাসপোর্ট রিনিউয়ের সময় প্রশাসন তদন্ত শুরু করতেই বিস্ফোরক তথ্য সামনে এল। ভারতীয় জেঠু ও জেঠিমাকেই ‘বাবা’, ‘মা’ হিসেবে দেখিয়ে ভারতীয় পাসপোর্ট বানিয়েছেন ওই যুবক। ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার। বর্তমানে কুয়েতেই আছেন সাওন বাগচি নামে ওই যুবক। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই অস্বস্তিতে পড়েছেন তাঁর জেঠু প্রমথ বাগচি ও জেঠিমা প্রান্তি বাগচি। তাঁদের দাবি, ভাইপোর এই ‘কীর্তি’-র কথা জানতেন না তাঁরা।
সাওন বাগচি বাংলাদেশের নাগরিক। ২০১৪ সালে তিনি ভারতে বেড়াতে আসেন। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া-১ ব্লকের খাজুরডিহি পঞ্চায়েতের একাইহাট গ্রামে তাঁর জেঠু, জেঠিমার বাড়ি। এখানেই সাওন দু’বছর ছিলেন। জেঠু প্রমথ বাগচি ও জেঠিমা প্রান্তি বাগচিকে বাবা-মা সাজিয়ে কৌশলে বিভিন্ন ভারতীয় নথি ও পাসপোর্ট বানিয়ে নেন বলে অভিযোগ। কয়েকবার বাংলাদেশে যাতায়াত করার পর ২০১৬ সালে ভারতীয় পাসপোর্ট হাতে পেয়ে তিনি পাড়ি দেন কুয়েতে।
সম্প্রতি কুয়েত থেকে সাওন বাগচি পাসপোর্ট নবীকরণের জন্য আবেদন করেন। নবীকরণ প্রক্রিয়ার সময় বিষয়টি নজরে আসে গোয়েন্দা বিভাগের। তদন্তে নেমে জেলা গোয়েন্দা আধিকারিকরা জানতে পারেন, যাঁদের মা-বাবা বলে উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁরা আদতে সাওনের জেঠু ও জেঠিমা। সাওনের প্রকৃত বাবা-মা, প্রশান্ত বাগচি ও মনিকা বাগচি এখনও বাংলাদেশেই বসবাস করেন। সেখানে রয়েছে তাঁদের নাগরিক পরিচয়পত্র।
একাইহাটে প্ৰমথ বাগচির বাড়িতে যায় জেলা গোয়েন্দা বিভাগ। ঘটনার কথা জানতে পেরে হতবাক প্রমথবাবু। তিনি বলেন, “আমরা কিছুই জানতাম না। ভাইপো বেড়াতে এসেছিল ঠিকই। কিন্তু এমন কিছু যে করেছে, তা ঘুণাক্ষরেও বুঝিনি। এখন শুনছি আমাকে ও আমার স্ত্রীকে মা-বাবা সাজিয়ে পাসপোর্ট করে কুয়েত চলে গিয়েছে।” একই কথা বললেন সাওনের জেঠিমাও।
অন্যদিকে জেলা গোয়েন্দা দফতর সূত্রে খবর, বিষয়টি নিয়ে পাসপোর্ট দফতরে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি জেলা পুলিশকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। কীভাবে এমন জাল নথি ব্যবহার করে পাসপোর্ট তৈরি হল, তা নিয়ে শুরু হয়েছে তদন্ত।