কালনা: ১৫০ টাকায় বিকচ্ছে টগর-গোলাপ। পাঁচ বছরের রঙের গ্যারান্টিও রয়েছে। এ কথা শুনেই দোকানটিতে বেড়েছে ভিড়। দোকানে ক্রেতার ভিড় দেখলে চোখ কপালে জোগাড়। তবে আসল রহস্য অন্য জায়গায়। এই টগর-গোলাপ কিন্তু ফুল নয়। তাহলে কী?
আসলে গুজরাটের সুরাট থেকে ১৫০ টাকায় শাড়ি আমদানি করা হয়েছে। যার নাম টগর-গোলাপ। পুজোর আগে টেকসই রং ও সস্তা দামে শাড়ি পেয়ে খুশি ক্রেতারাও। তবে কম দামি সুরাটের শাড়ি হাটে-বাজারে ছেয়ে যাওয়ায় কদর কমছে এ রাজ্যের তাঁতিদের।
জানা গিয়েছে, সমুদ্রগড়, ধাত্রীগ্রাম,পূর্বস্থলীর বিভিন্ন হাটে ব্যাপক চাহিদা সুরাটের দেড়শো টাকা দামের এই শাড়ির। এই হাটগুলিতে ব্যবসায়ীরা পাইকারি দামে শাড়ি কিনে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছেন। কমদামি টেকসই শাড়ি ন্যূনতম দাম হওয়ায় পুজোর আগে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের সোনায় সোহাগা।
জানা গিয়েছে, থান বা লট হিসাবে সুরাট থেকে শাড়ি আমদানি করা হচ্ছে। পরে সেই থান বা লট থেকে শাড়ির মাপে কেটে-কেটে মাত্র দেড়শো টাকায় বিক্রি চলছে। এক একটি লটে মিলছে ৩৫টি শাড়ি। তবে বাংলার তাঁতিদের বানানো শাড়ি থেকে আলাদা এই শাড়ি। মূলত, পলেস্টার ও অন্য মিশ্রণে তৈরি। বাজারে চাহিদা ও বিক্রি বাড়ায় হাসি ফুটেছে বস্ত্র ব্যবসায়ীদের মুখে। সেই সঙ্গে লট থেকে শাড়ি কেটে ভাঁজ করার জন্য কর্মসংস্থান হয়েছে শতাধিক মহিলার।
সুরাটের এই শাড়ির দাপটে বাংলার তাঁত শিল্পীদের কাজ কমে গিয়েছে। তাঁদের বানানো শাড়ি এক প্রকার কিনতে চাইছে না মহাজনরা। তাই তাঁতের শাড়ির অর্ডার না থাকায় তাঁত ছেড়ে অন্য পেশা বেছে নিতে হচ্ছে তাঁতিদের। তাঁতি বিশু দাস বলেন, “সুরাট থেকে এই শাড়ি আসায় আমাদের সমস্যা হচ্ছে। কেউ কিনতেই চাইছে না। বিক্রি হচ্ছে না কিছুই। যা অবস্থা তাতে সাড়ে সাতশো টাকার শাড়ি বেচতে হচ্ছে দেড়শো টাকায়। কীভাবে চলবে আমাদের?”