পূর্ব বর্ধমান: ফের বিস্ফোরক মন্তব্য বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর (Sayantan Basu)। কিছুদিন আগেই একটি চিটফান্ড কোম্পানির প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার দুর্নীতিকাণ্ডে সিবিআই গ্রেফতার করেছে বর্ধমানের তৃণমূল পুরপ্রশাসক প্রণব চট্টোপাধ্যায়কে। তাতে তৃণমূলের তরফে অভিযোগ করা হয়, বিজেপি চক্রান্ত করে এই গ্রেফতারি করিয়েছে। তারই পাল্টা এদিন মন্তব্য করেন সায়ন্তন। চক্রান্তের বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে সরাসরি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) নিশানা করেন তিনি।
সায়ন্তন এদিন বলেন, “বিজেপি কেন চক্রান্ত করে পুরপ্রশাসককে জেলে ভরবে! প্রণবাবুকে কে চেনে! কেউ কি চেনে! বিজেপি চক্রান্ত করলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে করবে। আর বিজেপি চক্রান্ত করলে তৃণমূলের কোনও নেতা মন্ত্রী জেলের বাইরে থাকত না।” তবে, সায়ন্তনের এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি তৃণমূল নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, সিবিআই ও পুলিশ সূত্রে খবর, সানমার্গ নামে একটি বেআইনি অর্থলগ্নিকারী সংস্থার থেকে প্রায় পৌনে চার কোটি টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে প্রণববাবুর বিরুদ্ধে। সানমার্গ চিটফান্ডের তথ্যতালাশে আগেই তদন্ত শুরু করেছিল সিবিআই। তাতেই প্রণববাবুর নাম উঠে আসে। অভিযোগ ওঠে, মোটা টাকার বিনিময়ে সানমার্গে লগ্নিকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি ও অন্যান্য় নানাভাবে সাহায্য করেছিলেন প্রণব।
২০১৮ সালেই চিটফান্ডের কেলেঙ্কারিতে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। অতি সম্প্রতি তারা এই মামলায় একটি চার্জশিট দেয়। তাতে চন্দ্রশেখর সাভার ও সৌম্যদ্বীপ ভৌমিকের নাম ছিল। বৃহস্পতিবার সকালে এই মামলায় জেরার জন্য প্রণববাবুকে কলকাতায় ডেকে পাঠিয়েছিল অন্য একটি কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি। সেই জেরা শেষে বিকেলে বেরিয়ে আসতেই সিবিআই তাঁকে জেরা শুরু করে। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার রাতে সিবিআই গ্রেফতার করে।
শুক্রবারই বর্ধমানে, প্রণববাবুর বাড়িতে হানা দেয় সিবিআইয়ের বিশেষ প্রতিনিধি দল। অন্যদিকে, বর্ধমানেরই ঢলদীঘির একটি বহুতল আবাসনে তদন্তে যান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দার প্রতিনিধিরা। সূত্রের খবর, ওই বহুতল আবাসনেই ছিল সানমার্গের অফিস। সেই অফিসের ভাড়া দিয়েছিলেন খোদ পুরপ্রশাসক।
ঘটনায়, প্রণববাবুর স্ত্রী রেখা চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, “সিবিআই এসেছিল। বেশ কিছু প্রশ্ন করেছে। প্রায় আধঘণ্টা ছিল। সানমার্গের তরফে বেশ কয়েকজন আমাদেরই অন্য একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেয়। আমরা জানতাম ওরা টেক্সটাইলের কাজ করে। এরপর যখন রিয়েল এস্টেটের কাজ শুরু করল ততদিনে ওরা ওই ফ্ল্যাট ছেড়ে দিয়েছে। এর বেশি আমরা আর কিছুই জানি না।”
মাত্র মাসখানেক আগেই পাঁচ সদস্যের কমিটি নিয়ে গঠিত হয় বর্ধমান পুরসভার নতুন প্রশাসক মণ্ডলী। নতুন প্রশাসক হন বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা প্রণব চট্টোপাধ্যায়। বর্ধমান পুরসভার পুরপতি হিসেবে দীর্ঘসময় দায়িত্বে ছিলেন তিনি। প্রণব পুরপ্রশাসকের দায়িত্ব পাওয়ার পর ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় তদন্তের জন্য একাধিকবার পুরসভায় এসেছিলেন সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দল। সেইসময়, প্রণববাবুকে জিজ্ঞাসাবাদও করেন তাঁরা। যদিও, সেই ঘটনায় প্রণববাবু স্পষ্টই নিজের যুক্ত থাকার কথা অস্বীকার করেছিলেন।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee Nepal Visit: মুখ্যমন্ত্রীর নেপাল সফরেও ‘না’ বিদেশমন্ত্রকের! দেওয়া হল না ছাড়পত্র