পূর্ব বর্ধমান: ভোটের পরেও মেটেনি সন্ত্রাস। সোমবার রাতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মঙ্গলকোট। তৃণমূল নেতা অসীম দাসকে (Asim Das) গুলি করে মারার অভিযোগে উত্তাল হয়ে ওঠে মঙ্গলকোটের শিউর গ্রাম। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপিআশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই কাজ করেছে। যদিও বিজেপি নেতৃত্বে দাবি করে, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই খুন। মঙ্গলবার, মঙ্গলকোট কাণ্ডে মুখ খুললেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
এদিন, বর্ধমানের কার্যালয়ে দলীয় বৈঠক করতে এসে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, “তৃণমূলের লোকেরাই নিজেদের নেতাকে মেরেছে। এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। বিজেপি এসব খুনোখুনির রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। আমাদের ১৭৫ জন কর্মী খুন হয়েছে। তারপরেও বিচার পাওয়া যায়নি। তৃণমূলের লোকেরা নিজেরাই খুনোখুনি করে বিজেপির নামে চালাচ্ছে।”
অন্যদিকে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “যেকোনো মৃত্যু দুঃখজনক ঘটনা। তবে, এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার দোষ না করলেও সাজা দেয়। বিজেপি করলে তো কথা নেই। পুলিশ তো নেতাদের দলদাস। সঠিক তদন্ত হয়ে যদি দোষীরা শাস্তি পায় তবে ভাল। এখন তো কিছু হলেই বিজেপির ঘাড়ে দোষ দিতে হবে!”
তৃণমূল নেতা অসীম (Asim Das) সোমবার নিজের মোটরবাইকে করে কাসেমবাজারে গিয়েছিলেন। সন্ধ্যাবেলায় একাই লাখুড়িয়ায় বাড়ির পথে ফিরছিলেন। সিয়োর নামে একটি জায়গায় পিছন তাঁকে অসীমবাবুকে উদ্দেশ্য করে একজন দাদা বলে ডাক দেন। মোটর বাইক থামিয়ে দাঁড়িয়ে যান তৃণমূল নেতা। এর পরেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় এক আততায়ী। মঙ্গলকোট ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যান স্থানীয়রা। সেখানেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মৃত তৃণমূল নেতার পরিবারের অভিযোগ, আগেও একবার শাসক দলেরই আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন তিনি। পরিবারের দাবি, তৃণমূলের কিছু লোক চাইতেন না যে অসীমবাবু দলে থাকুন। এর ফলে একাধিকবার তাঁর বাড়ি ঘেরাও হয়েছিল বলেও অভিযোগ। এ নিয়ে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের কাছে দরবারও করেন অসীম দাস। সেবার সব জানার পর অনুব্রত এলাকার নেতৃত্বকে ধমকে দিয়েছিলেন। শাসন করে বলেছিলেন, নিজেদের মধ্যে এ ধরনের ঝামেলা বরদাস্ত করা হবে না। মৃত নেতার পরিবারের আরও দাবি, মঙ্গলকোটে তৃণমূলই ক্ষমতায়। বিধানসভার পর বিজেপির আর কোনও অস্তিত্বই নেই। তাই, এই খুনের পেছনে তৃণমূলের ‘অন্য গোষ্ঠী’ ছাড়া আর কারও হাত নেই বলে অভিযোগ অসীমবাবুর পরিবারের। ঘটনায় ৪ তৃণমূল কর্মীর নামে থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন মৃতের পরিবার। আরও পড়ুন: ‘মুখ্যমন্ত্রীর মুখটা শুধু ব্লেড দিয়ে কেটে দিয়েছে!’