কাটোয়া: অবশেষে উদঘাটন হল কাটোয়া স্টেশনের ট্রেনের কামরায় পড়ে থাকা পরিত্যক্ত ব্যাগের বোমাতঙ্ক রহস্য। বম্ব স্কোয়াডে প্রতিনিধিরা ব্যাগ খুলে বার করলেন তৃতীয় শ্রেণির এক পড়ুয়ার বই, খাতা পেন ও জলের বোতল। ছাত্রের নাম সোহেল সোরেন। বাবা মুকুল সোরেন। বাড়ি মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে।
ঘড়িতে তখন প্রায় সাড়ে দশটা। কাটোয়া স্টেশনের ২ নম্বর প্লাটফর্মে তখন দাঁড়িয়ে ছিল ০৩০৬২ ডাউন কাটোয়া – আজ়িমগঞ্জ প্যাসেঞ্জার দাঁড়িয়ে ছিল। ট্রেনের এক ফাঁকা কামরায় একটি নীল রঙের ব্যাগ পড়েছিল। ট্রেনের চালকই বিষয়টি প্রথম দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় রেল পুলিশ। পরিত্যক্ত নীল ব্যাগের খবর নিমেষে ছড়িয়ে পড়ে স্টেশন চত্বরে। নিত্যযাত্রী থেকে শুরু করে ২ নম্বর প্লাটফর্ম এবং সংলগ্ন এলাকায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়।
অনুমান করা হচ্ছে, ভুলবশত ট্রেনে ব্যাগটি ফেলে চলে যায় ওই পড়ুয়া। এরপরই ফাঁকা টেনে ওই ব্যাগটি পড়ে থাকতে দেখে ছড়ায় বোমাতঙ্ক। আজ দুপুরে কাটোয়ায় স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা এক ট্রেনে যে পরিত্যক্ত ব্যাগ ঘিরে বোমাতঙ্ক তৈরি হয়। ডাউন আজ়িমগঞ্জ-কাটোয়া প্যাসেঞ্জারের কামরায় একটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্বাভাবিকভাবেই পরিত্যক্ত ওই ব্যাগকে ঘিরে আতঙ্ক ছড়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কামরাটিকে ঘিরে ফেলেন জিআরপি ও আরপিএফ। রেল পুলিশের তরফে প্রাথমিক ভাবে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে ব্যাগটি পরীক্ষা করে দেখা হয়। তাতে সন্দেহজনক কিছু ধরা পড়ে। এরপরই কাটোয়া স্টেশনের তরফে খবর দেওয়া হয় দুর্গাপুরের বম্ব স্কোয়াডে।
কোনওরকম বিপত্তি এড়াতে ট্রেনের যে কামরায় ওই ব্যাগটি ছিল, সেটিকে বাকি ট্রেনের থাকে আলাদা করে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ সন্ধ্যায় বম্ব স্কোয়াডের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান কাটোয়া স্টেশনে। সঙ্গে আসে পুলিশের কুকুরও। দীর্ঘক্ষণ পরীক্ষার পরে রাতে ব্যাগটি বম্ব স্কোয়াডের সদস্যরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে দূরের একটি মাঠে নিয়ে যান। সেখানেই ব্যাগটি খোলা হয় এবং তার ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে তৃতীয় শ্রেণির এক পড়ুয়ার বই, খাতা পেন ও জলের বোতল। স্বস্তির নিঃশ্বাস পরে সকলের।
রেল পুলিশের ওসি রিয়াজ় শামিম জানিয়েছেন, ” দুর্গাপুর থেকে বম্ব স্কোয়াডের সদস্যরা এসেছিলেন। তাঁরা যথাযথ এসওপি মেনে ব্যাগটিকে আগে স্ক্যান করেন। স্ক্যান করার সময় কিছু পাওয়া যায়নি। তবুও ব্যাগটির মধ্যে যে কোনওরকম বিস্ফোরক নেই, তা পুরোপুরি নিশ্চিত হতে আমরা ব্যাগটিকে একটি ফাঁকা মাঠে নিয়ে আসি। সবরকম সুরক্ষাবিধি মেনে মাঠেই ব্যাগটি খোলা হয় এবং সেখানে দেখা যায়, তৃতীয় শ্রেণির এক পড়ুয়ার বই-পত্র, পেনসিল এবং জলের বোতল ছিল। আরও এখানে যথেষ্ট সজাগ রয়েছি। নিয়মিত চেকিং চলছে। আগামীদিনে সেই চেকিং আরও বাড়ানো হবে।”
আরও পড়ুন : Dilip Ghosh Exclusive: ‘যাঁরা আমাকে অপছন্দ করেন, তাঁদের জন্য বিজেপির অফার অধ্যাপক সুকান্ত’, বললেন দিলীপ