বর্ধমান: সকালে দুধওয়ালা ডেকে ডেকে চলে যান। দরজা খোলেননি কেউ। বাড়ির যে মানুষগুলো সকালেই ঘুম থেকে উঠে যান, তাঁদের কাউকেই দেখতে পাওয়া যায়নি সকালে। মেয়েটাও পড়তে যেতে দেখেননি কেউ। ফলে সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। এরই মধ্যে বাড়িতে আসেন এক ব্যক্তি। দরজায় কড়া নাড়েন তিনি। তারপর জানলা দিয়ে উঁকি দিতেই শিউরে ওঠেন প্রতিবেশীরা। গলায় ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন বাড়ির কর্তা। তখনও বাকি দৃশ্য অধরা। দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকতেই আরও ভয়ানক দৃশ্য। খাটের ওপর পড়ে রয়েছে বছর তেরোর মেয়েটার শরীর। আর মেঝেতে মায়ের দেহ।
একই পরিবারের তিন সদস্যের রহস্যমৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়াল কাটোয়ার পানুহাটে। মৃতদের নাম নইন শেখ (৩৫), শেফালি বিবি, পিঙ্কি খাতুন (১৩)। নইন শেখ পেশায় গাড়িচালক। স্থানীয় এক বাসিন্দারই গাড়ি চালান তিনি। প্রত্যেকদিন সকালে তিনি তাঁর বাড়িতে চলে যান। এদিন যাননি। তাই খোঁজ নেওয়ার জন্য লোক পাঠিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। তিনিই প্রথম এই দৃশ্য দেখতে পান।
ঘটনার আকস্মিকতায় স্তম্ভিত বাড়ির অনান্য সদস্য ও প্রতিবেশীরা। পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, সংসারে সেভাবে কোনও আর্থিক সঙ্কট ছিল না। স্বচ্ছল পরিবার ছিল হাসিখুশি। বাইরে থেকে সেভাবে বোঝাই যাচ্ছিল না ভিতের কী ‘রোগ’ বাসা বেঁধেছে।
রবিবার রাতেও একসঙ্গে বসে খাওয়া দাওয়া করেন তাঁরা। তারপর রাতে এক প্রতিবেশীর সঙ্গে দেখাও হয়। কথা হয় হাসিমুখে। কী এমন ঘটল, যাতে এই ঘটনা! স্তম্ভিত সকলেই। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, মেয়েটার দেহ খাটের ওপর পড়ে ছিল। আর স্ত্রীর দেহ ছিল গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন নইন। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, স্ত্রী ও মেয়েকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন স্বামী। কী কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল,তা নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছে পরিবার। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সদস্য়রা। কারণ হাতড়ে বেরাচ্ছেন তাঁরা।