পূর্ব বর্ধমান: রবিবার ছিল তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস (TMC)। আর সেই দিনও প্রকাশ্যে দলের গোষ্ঠী কোন্দল। প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে নেতার বিস্ফোরক মন্তব্যে চাঞ্চল্য ছড়ালো পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে। এ দিনের সভা থেকে বিধায়ককে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন প্রাক্তন ব্লক সভাপতি শ্রীমন্ত রায়।
তিনি বিধায়ক অলক কুমার মাঝিকে উদ্দেশ্য করে বলেন যে, তিনি একজন অযোগ্য বিধায়ক। এমন অযোগ্য বিধায়ক গোটা পশ্চিমবঙ্গে আর একজনও নেই। এরপর আরও একধাপ এগিয়ে তাঁর বক্তব্য, “যারা বিধায়কের হয়ে ঘেউ-ঘেউ করছে তারা সাবধান। তাদের পিছেনে পেট্রোল ঢেলে কীভাবে তাড়াতে হয় তা জানা আছে।”
শ্রীমন্ত রায় বলেন, “এখন যারা ঠিকাদার তারা কেউ স্কুলের সভাপতি কেউ অঞ্চল সভাপতি।” একা বিধায়ক নয়, পাশাপাশি তিনি বর্তমান ব্লক সভাপতি তথা জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি মেহমুদ খানের দিকেও ইঙ্গিত করেন। তিনি বলেন, “অনেক দুর্নীতি হয়েছে। ওপেন টেণ্ডার হয়নি। আগামী দিনে এরাও তৃণমূল করবেন। পুরনোরাও করবেন। মানুষ এইসব দুর্নীতি আর অন্যায়ের প্রতিকার চাইবে।”
একই মঞ্চ থেকে একইসঙ্গে সুর চড়ান চকদিঘি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গৌরসুন্দর মণ্ডল। তিনি বলেন, “আবাসের তালিকার নিয়ে প্রতিটা পঞ্চায়েতে কী সমস্যা হচ্ছে তা কি বিধায়ক একবারও খোঁজ নিয়েছেন? আমরা সংগঠন করা লোক। একমাসের মধ্যে বিধায়ক লোক নিয়ে আসুন। আমরাও লোক দিচ্ছি। কোনওদিনই পেরে উঠবেন না।”
এই প্রসঙ্গে বিধায়ক অলক মাঝি টেলিফোনে জানান, “আমি কাজ করেছি কী না তার বিচার করবেন এলাকার মানুষ। শ্রীমন্ত রায় নিজের বুথটাই জেতাতে পারেনি। আমার বিরুদ্ধে কোনও দোষের প্রমাণ হলে দল যা শাস্তি দেবে মেনে নেব।”
উল্লেখ্য সপ্তাহ খানেক আগে জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্বাচন নিয়ে দল আড়াআড়ি ভাগ হয়ে যায়। পঞ্চায়েত সমিতির মোট ৩৯ জন সদস্যের মধ্যে ১ জন মারা গিয়েছেন। দু’জন ওই দিন অনুপস্থিত ছিলেন। বাকী এর মধ্যে ১৪ হন সদস্য ভোট বয়কট করেন। শেষপর্যন্ত প্রাক্তন জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মেহমুদ খানের অনুগামী ভূতনাথ মালিক সভাপতি নির্বাচিত হন ২২ জন সদস্যের সমর্থনে। এরপরও চলছে তৃণমূলের গোষ্ঠী-কোন্দল।