পূর্ব বর্ধমান: ‘বার্ষিক ৭ লক্ষ টাকা আয়ে সম্পূর্ণ কর ছাড়’, বড় ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। নির্মলার বাজেটে মধ্যবিত্তদের জন্য করের ছাড় ঘোষণা হয়েছে, কিন্তু তাতে মধ্যবিত্তদের আদৌ কতটা সুরাহা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন ঝুলেই রইল। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বাজেট নিয়ে বুধবারই কটাক্ষ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদী সরকারের বাজেট মমতার কথায়, “টোটালটাই লস আসলে কর ছাড়ের বিষয়টি ২ বাড়াল, কাটল আড়াই।” পূর্ব বর্ধমানের সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে একেবারে বিভিন্ন ধারা উল্লেখ করে হিসাব কষে ব্যাখ্যা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেটে বেকারদের জন্য একটি কথাও বলা হয়নি। নির্বাচন এলে ২ কোটি মানুষকে চাকরি দেব, আর চলে গেলে ২ কোটি লোকের চাকরি খেয়ে নেয়। কারণ সব ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ।” মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “নেচে নেচে বেরিয়ে বলছে, ইনকাম ট্যাক্স আমরা ৫ লক্ষ থেকে ৭ লক্ষ স্ল্যাব বাড়ালাম। আমি ভাল করে বলছি শুনুন, কী করছে চালাকিটা। মাছের তেলে মাছ ভেজেছে… ”
মঞ্চে দাঁড়িয়েই নিজের মোবাইলটা বার করেন তিনি। তিনি বলেন, “ধরুন ২ বাড়াল, আড়াই কাটল।” হিসাব দিয়ে বলেন, “৮০ সি ধারা। এলআইসি, পিপিএফ কিংবা মিউচ্যুয়াল ফান্ড মিলিয়ে আগে যেখানে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছাড় মিলত, সেখানে দেড় লক্ষ টাকা ছাড় আর পাবেন না।” এরপরই তিনি বলেন, ” স্ল্যাবের ২ যেটা বাড়িয়েছে, এখানেই দেড় উঠিয়ে দিল।” মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ” এবার মেডিক্যাল ইনস্যুরেন্স… প্রিমিয়ামে ৮০ ডি ধারায় পুরো পরিবারের জন্য ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় পেতেন, নতুন কর কাঠামোয় তাও পাবেন না। দেড় আর পঞ্চাশ দুই…হল দুই।” মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ন্যাশনাল পেনশন স্কিমেও ছাড় তুলে দেওয়া হয়েছে। ৮০ সি, ডি ধারায় ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ন্যাশনাল পেনশন স্কিমে যে ছাড় ছিল, সেটাও আর পাওয়া যাবে না বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, কর ছাড়ে স্ল্যাব ৫ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ৭ লক্ষ পর্যন্ত যে করা হয়েছে বটে, তবে আগে যে ভর্তুকি দেওয়া হত, তা তুলে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি একশো দিনের কাজ, পিএম-পোষণের মতো সামাজিক ক্ষেত্র থেকে শুরু করে খাদ্য, সার ভর্তুকিতে খরচে বিপুল পরিমাণে খরচ ছাঁটাই করা হল বাজেটে।
মুখ্যমন্ত্রী দুই বাড়িয়ে আড়াই কমানোর হিসাব দিয়েছেন। সঙ্গে বলেছেন, “ধাই কিড়ি কিড়ি.. আসলে দিল দুই, কাটল আড়াই।”
যদিও এই বাজেটকে জনমোহিনী বাজেট বলেই ব্যাখ্যা করছেন বিজেপি নেতারা। মুখ্যমন্ত্রীর এই কথা প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আতঙ্কে ভুগছেন। এখন সেটা সবার মাথায় ঢুকাচ্ছেন। গতকালই বলেছিলেন চব্বিশের ভোটকে মাথায় রেখে এই বাজেট, আজই এই কথা বলছেন। সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলছেন। একটা এত বড় অসত্য প্রচার করতে পারেন? মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যদি সব থেকে থাকে, তাহলে সামনে আনছেন না কেন?”