
বর্ধমান: বাংলার SIR বিতর্কের মাঝেই বর্ধমানের সভা থেকে আরও একবার বাংলা ভাষা নিয়ে সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তুলে আনলেন পাকিস্তান প্রসঙ্গও। কেন্দ্রকে খোঁচা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “এখানে নাকি সব বাংলাদেশ হয়ে গিয়েছে। পঞ্জাবের পাশে পাকিস্তান, পাকিস্তানেরও একটা পঞ্জাব রয়েছে, সেকথা তো বলো না। আমাদের পাশে বাংলাদেশ তো আমরা তৈরি করিনি। তোমাদের প্রপিতামহরা করেছে। আমাদের ভাষা যদি এক হয়, আমরা কী করতে পারি?”
আর তার প্রেক্ষাপট বোঝাতে গিয়ে তিনি বলেন, “১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা আন্দোলনের পর দেশভাগ হয়। ভারত ভাগ করতে গিয়ে বাংলাকে ভাগ করেছিলেন আর পঞ্জাবকে ভাগ করেছিলেন। আন্দামান সেন্ট্রাল জেল থেকে রেপ্লিকা তুলে এনেছি, দেখা যাতে ৭০০ ওপর বাঙালি গ্রেফতার ছিলেন, যাঁরা স্বাধীনতা আন্দোলন করেন। ১০ শতাংশ ছিলেন পঞ্জাবীরা।” এরপরই তিনি প্রশ্ন তোলেন, তাহলে পঞ্জাবের পাশে পাকিস্তান নিয়ে কেন কোনও প্রশ্ন ওঠে না?
বছর ঘুরলেই বাংলায় মহা-ইভেন্ট। তার আগে ‘বাঙালি অস্মিতা’- এই শব্দ বন্ধ এখন বঙ্গ রাজনীতির জ্বলন্ত ইস্যু। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শাসক-বিরোধী-প্রত্যেক দলের নেতৃত্বের মুখে ঘুরেফিরে আসছে বাঙালি অস্মিতা রক্ষার কথা! আর রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তার মধ্যে বাংলা ভাষাকেই এবার আন্দোলনের হাতিয়ার শাসকদলের। পথে নেমেছে রাজ্যের শাসকদল, সংসদে তুলেছে ঝড়। এমনকি ছোঁয়া লেগেছে পুজোর অনুদানেও।
ইস্যু, ভিন রাজ্যে বাংলা ভাষায় কথা বলায় বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর হেনস্থা ও তাঁদের বাংলাদেশি সন্দেহে পুশব্যাকের অভিযোগ। আর সেক্ষেত্রে বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারকে নানাভাবে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে রাজ্য সরকার। পাল্টা অবশ্য গত শুক্রবার মেট্রোর নতুন তিনটি রুট উদ্বোধনের পর দমদমের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই বাঙালি অস্মিতাকে শান দিতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বর্ধমানের সভা থেকে তাতে কেন্দ্রকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ” বাংলাকে সহ্যই করতে পারে না। বাংলা দেখলেই গা জ্বলে, আর লুচির মতো ফোলে।”