পূর্ব বর্ধমান: কেউ যাচ্ছিলেন দক্ষিণ ভারতে চিকিৎসার জন্য। কেউ আবার যাচ্ছিলেন কাজের খোঁজে। কিন্তু, গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই মাঝরাস্তাতেই খেলনা গাড়ির মধ্য়ে ভেঙে দুমড়ে-মুচড়ে যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস (Coromandel Express Accident)। ধাক্কা হয় হামসফর এক্সপ্রেস ও আরও একটি মালগাড়ির সঙ্গে। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় ইতিমধ্যেই প্রায় তিনশো জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত প্রায় হাজার। এই অভিশপ্ত ট্রেনেই ছিলেন পূর্ব বর্ধমানের ১১ জন শ্রমিক। সকলেরই বাড়ি ভাতার থানার বামশোর এবং কালুত্তক গ্রামে। গ্রামের বাসিন্দার জানাচ্ছেন, সকলেই কেরলে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। কিছুদিন আগেই ফিরেছিলেন বাড়ি। তারপর ফের যাচ্ছিলেন কেরলে। তারমধ্যেই ঘটে যায় এই ঘটনা।
ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় ১১ জনই কমবেশি আহত হয়েছেন। শুক্রবার রাতের বিভীষিকাময় সেই স্মৃতি মাথায় নিয়ে কোনওমতে এদিন ঘরে ফিরেছেন সকলে। আহত এই পরিযায়ী শ্রমিকরা দুই দলে ভাগ হয়ে বাড়ি ফেরেন। একটি দল একটি গাড়ি ভাড়া করে গ্রামে আসেন। অন্য দলটি বাস ধরে আহত অবস্থাতেই শালিমার স্টেশনে আসেন। সেখানে থেকে ভাতার আসেন বলে খবর।
গত রাতের স্মৃতি মনে করতে গিয়ে এখনও আঁতকে উঠছেন আহত শেখ পুটু। তিনি জানাচ্ছেন, “বামশোর গ্রাম থেকে কেরলে যাচ্ছিলাম। সেখানে আমরা রাজমিস্ত্রির কাজ করি। দুর্ঘটনার পর আমরা সকলেই ট্রেন থেকে ছিটকে পড়ি। একটা ট্রেনের উপর আরও একটা ট্রেন চেপে যায়। কোওমতে আমরা জানলা দিয়ে বেরিয়ে প্রাণে বাঁচি। বাইরে বেরিয়ে দেখি চারদিকে মৃতদেহের স্তূপ। দিকে দিকে আহতদের আর্ত চিৎকার।” এদিকে গ্রামে ফেরার পর প্রথমে তাঁদের ভাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে একজনকে বর্ধমান হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়ছে বলে খবর। বাকিদের অবস্থা স্থিতিশীল।