
পূর্ব বর্ধমান: বাংলায় এসে সঙ্ঘে যোগদানের আহ্বান জানালেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত। তবে এও স্পষ্ট করে দিলেন, নেওয়ার জন্য নয়, সঙ্গে আসতে হলে দিতে হবে… তাঁর কথায়, “সঙ্ঘ বুঝতে গেলে
আমাদের মধ্যে আসতে হবে। মন চাইলে আসুন, মন না চাইলে চলে যেতে পারেন।
এখানে জবরদস্তি নয়। তবে নেওয়ার জন্য নয়, দেওয়ার জন্য আসতে পারবেন।”
আদতে পূর্ব বর্ধমানের সভায় ভাগবতের বক্তব্যের সিংহভাগই জুড়ে ছিল ভারত-হিন্দু সমাজ ও তার মাহাত্ম্য। আর সে প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই ভাগবত বোঝানোর চেষ্টা করেন, সঙ্ঘ কোন উদ্দেশ্য, কোন লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে।
সংগঠনের সারবত্তা বোঝান ভাগবত। তাঁর কথায়, “সংগঠন। সংগঠন মানে একতা। একতা স্বার্থের জন্য নয়। আমাদের কিছু পাওয়ার নেই। হিন্দু সমাজের সকলের সঙ্গে সম্পর্ক আত্মীয়তার। অপার আত্মীয়তার। হিন্দু সমাজের মনে বিশ্বের প্রতি আত্মীয়তা রয়েছে। আর সে কারণেই সঙ্ঘ সমাজের মূল পাথেয় শুদ্ধ সাত্ত্বিক প্রেম। এই প্রেম স্বার্থের জন্য নয়। বৈভবের জন্য আমরা কাজ করি।”
সঙ্ঘ ঠিক কোন উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে, দেশের জন্য সঙ্ঘের স্বার্থকতা কোথায়, তা বোঝাতে ভাগবত বলেন, “ভারত সকলের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক রাখে। যারা শুক্র মনোভাবাপন্ন, তাদের সঙ্গেও মিত্রতার সম্পর্ক রাখে। সঙ্ঘের সদস্যরা এটা অধ্যাবশায় করে। সঙ্ঘের ব্যাপ্তিও সেই কারণেই হচ্ছে। তাও আমরা বাড়তে চাই। সমাজের উন্নয়ন, এগানোর জন্যই। নিজের জীবনকে শুদ্ধ বানানো, দেশের জীবনকে উত্তম বানানো, বিশ্বকে শান্তিময় করা- এই তিন লক্ষ্যেই সঙ্ঘ কাজ করে।” আর তারপরই সঙ্ঘে যোগদানের আহ্বান জানান তিনি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কথায়, ২৬-এর নির্বাচনের আগে ভাগবতের এই বক্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিশ্লেষকরা বলছেন, কোনও বড় নির্বাচনের আগে সঙ্ঘ প্রধান শেষ কবে বাংলায় এসে ১০ দিন কাটালেন, সঙ্ঘের সংগঠন নিয়ে পর্যালোচনা করলেন, তা স্মৃতি হাতড়ে মনে করতে হয়। বিশ্লেষকরাই বলছেন, সংগঠনের খোলনোলচে বদলাতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, এবার গ্রামীণ ক্ষেত্রে গ্রামপঞ্চায়েত ও পুরসভার ক্ষেত্রে সঙ্ঘের ওয়ার্ড ভিত্তিক শাখা তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। তাতে পঞ্চপরিবর্তনের কথাও ভাবা হয়েছে। সামগ্রিক ভাবে সামাজিক উন্নয়নই সংঘের লক্ষ্য।