পূর্ব বর্ধমান: গুজরাটে ব্রিজ বিপর্যয়। মৃত্যু হয়েছে বাংলার যুবকের। কিন্তু তাঁর দেহ বাংলায় আনতে কোনও রকমের সাহায্য করেনি গুজরাট সরকার। গুজরাট থেকে রাজ্যে মৃত হাবিবুল শেখের দেহ আনতে কেন্দ্রীয় সরকারও কোনওরকম সাহায্য করেনি। এমনই অভিযোগ পরিবারের। মঙ্গলবার সকালে বর্ধমানের পূর্বস্থলির বাড়িতে আনা হয় হাবিবুলের দেহ। কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবার। সঙ্গে উগরে দেন গুজরাট সরকারের ওপর ক্ষোভও। পরিবারের দাবি, ধার করে বিমান ভাড়ার টাকা জুগিয়ে নিজেদের খরচে দেহ নিয়ে আসতে হয়েছে বাড়িতে। মঙ্গলবার সকালে হাবিবুলের বাড়িতে পৌঁছন বর্ধমান জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কাছে কেন্দ্রীয় সরকারের অবহেলার বিষয়ে একাধিক অভিযোগ জানান হাবিবুলের পরিবারের সদস্যরা। জেলা সভাপতির অভিযোগ, মাছ পাঠানোর মত মৃতদেহ পাঠানো হয়েছে। কোনওরকমের মর্যাদা পর্যন্ত দেয়নি গুজরাট সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হলেও, তা পালন করা হয়নি বলে অভিযোগ। রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন, পরিবারের সঙ্গে কথা বলে রিপোর্ট দেবেন রাজ্যে। প্লেনের ভাড়া-সহ হাবিবুলের পরিবারের যা খরচ হয়েছে, তা পূরণে দল থেকে ব্যবস্থা করার কথাও জানিয়েছেন তিনি। এদিন পরিবারের হাতে বেশ কিছু টাকা তুলে দিতে দেখা যায় জেলা সভপতিকে।
হাবিবুলের দাদা বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোনও রকমের সাহায্য করা হয়নি। আপাতত টাকা পয়সা ধার করে প্লেনে দেহ নিয়ে এসেছি। একটা পয়সাও পায়নি।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “গুজরাট মডেলের নমুনা প্রাণ যাওয়া। ঝুলন্ত ব্রিজের নিরাপত্তা যা হওয়া উচিত ছিল, তার দেখভাল হয়নি। খুব দুঃখের ঘটনা। ওখান থেকে এমনভাবে দেহ আনা হয়েছে, যেন মাছ আনা হচ্ছে। সম্পূর্ণ মর্যাদা দিয়ে আনা হয়নি। পরিবারের ৭-৮ জন ওখানে ছিলেন, তাঁদের প্লেনের ভাড়াটাও দেওয়া হয়নি। সবই নিজেদের করতে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছে, কিন্তু এই সাহায্য তো সঙ্গে সঙ্গেই করা হয়। এক্ষেত্রে সেটা হয়নি।”
অন্যদিকে বিজেপি-র জেলা সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। কিন্তু এটা নিয়ে তৃণমূল রাজনীতি করছে। গুজরাট সরকার পাশে রয়েছে। তৃণমূলকে প্রশ্ন করি, হাবিবুর শেখকে কেন কাজের জন্য গুজরাট যেতে হল? যেখানে তৃণমূলের আমলে নাকি এত উন্নতি হয়েছে?”
হাবিবুলের দেহ বাড়ি আসা মাত্রই রাজনৈতিক নেতৃত্ব ভিড় জমিয়েছেন সেখানে। পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।