
বর্ধমান: ফোন করে এক যুবতীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ। ঘটনায় নাম জড়ালো এক বিজেপি কর্মীর। অভিযুক্তকে খুঁজছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের জ্যোৎশ্রীরাম পঞ্চায়েত এলাকায়। সেখানেই বাড়ি ওই অভিযুক্তের। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এলাকার বিজেপি পার্টি অফিসেও তাঁর অবাধ যাতায়াত ছিল।
কী ঘটেছে?
জানা গিয়েছে, জামালপুর থানা এলাকার এক যুবতী পুলিশের কাছে বিজেপি কর্মীর নামে অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, বর্তমানে তিনি বাবার বাড়িতেই থাকেন। স্বামী ছেড়ে চলে গিয়েছেন অনেকদিন আগেই। নিজের রোজগারের জন্য কয়েকমাস আগে তিনি তাঁর বাবার দোকান ঘরের পাশে ‘ফাস্টফুডের’ দোকান খুলেছেন।
অভিযোগ, তিনি দোকান খোলার পর তাঁর ফোন নম্বর কোনও ভাবে অভিযুক্ত পেয়ে যান। যুবতীর দাবি, তারপর থেকে মাঝে মধ্যেই তাঁকে ফোন করে বিরক্ত করতেন তিনি। পাশাপাশি অভিযুক্ত বিজেপি কুপ্রস্তাব দেওয়াও শুরু করেন। এমনকী, দিনে- দুপুরে তাঁকে রাস্তায় দেখতে পেলে তাঁর পথও আটকায়। যুবতী পুলিশকে আরও বলেন, “গত ১৬ অক্টোবর সন্ধেয় গ্রাহক সেজে আমার ফাস্ট ফুডের দোকানে ঢোকেন। এসেই উল্টো-পাল্টা কথা শুরু করেন। নোংরা প্রস্তাব দেন। এরপর আমি ভীত হয়ে পড়ি। দোকান ছেড়েই পালানোর চেষ্টা করি। সেই সময় ওই লোকটা আমার মুখ ও হাত চেপে ধরে। এমনকী ফ্লাইং কিস দেন।”
যুবতীর বাবা বলেন, “ওর এমন আচরণে ভীত ও অপমানিত হয়ে পড়ি আমরা। মেয়ে কান্নাকাটি শুরু করে। কী হয়েছে জানতে চাইলে মেয়ে জানায় অশ্লীল আচরণ ও কুকীর্তি বিষয়ে। এর পরেই আমি আমার মেয়ের নিরাপত্তার জন্য থানায় অভিযোগ দায়ের করি।”
অভিযুক্তর কঠোর শাস্তির দাবিতে মেয়েকে নিয়ে জামালপুর থানার দ্বারস্থ হন নির্যাতিতার বাবা। তাঁর মেয়ে নিজে ওই বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে জামালপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ নিয়ে এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) অভিষেক মণ্ডল বলেন, “অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। যুবক এখন পলাতক রয়েছে।পুলিশ তার খোঁজ করছে।”
এদিকে বিজেপি কর্মীর এমন কুকীর্তি প্রকাশ্যে আসাতেই গর্জে উঠেছেন রাজ্যের শাসক দলের নেতারা। বিজেপির বিরুদ্ধে একারাশ ক্ষোভ উগরে দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা দেবু টুডু বলেন, “এটাই বিজেপির আসল স্বরূপ।” পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় জেলা বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “বাংলায় ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এসআইআর (SIR) হচ্ছে। বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় আসবে এটা বুঝতে পেরে সিপিএম ও তৃণমূলের লোকজন দলকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে।”