
মেমারি: কালীপুজোর জন্য বাড়িতে এসেছিলেন বিশেষ বন্ধু। কিন্তু সেই যে এমন কাজ করবেন কেউ ভেবেছিল? কালীপুজোর রাতে দেবীর গহনা চুরি করে শ্রীঘরে এক নিমন্ত্রিত। প্রতিমার গায়ের গহনা হাতসাফাই করার অভিযোগে মেমারি থানার পুলিশ আজ তাঁকে বর্ধমান আদালতে তুলেছে। পূর্ব বর্ধমানের রসুলপুরের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের ঘটনা। জানা গিয়েছে, আড়াইশো বছর ধরে চলে আসছে জাগ্রত এই কালীপুজো। সেখানেই মায়ের গহনা এভাবে খোয়া যায় পড়ে যায় হুলস্থুল।
ঘড়ির কাঁটা তখন রাত ১২ টা ছুঁয়েছে। সবে মা কালীর পুজোর শেষ হয়েছে। এবারে তো গোটা রাত পুজো। পরিবারের অনান্য সদস্যরাও পরিবারের আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়নে ব্যস্ত। প্রতিবারই এ পরিবারের ডাকে অনেকেই আসেন দেবীদর্শনে। হঠাৎ করেই পরিবারের এক সদস্যা লক্ষ্য করেন দেবীর বেশ কিছু গহনা দেবীর দেহে নেই। পরিমাণ প্রায় দশ ভরি। দামের কথা ধরলে ১০ লাখের বেশি। সবার অলক্ষ্যে তা হাতসাফাই হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হতেই শুরু জল্পনা। এরপর মেমারি থানায় জানানো হয়। পরে জানান হয় লিখিত অভিযোগ।
এই পরিবার রসুলপুরের দলুইবাজারের বন্দ্যেপাধ্যায় পরিবার। আড়াইশো বছর ধরে পরিবারে হয়ে আসছে কালীপুজো। সেখানে পরিবারের সদস্যরা যেমন উপস্থিত থাকেন, তেমনি আমন্ত্রিত ও থাকেন বেশ কিছু বিশেষ মানুষও। সেই রকমই পরিবারের এক মহিলা সদস্যের বিশেষ বন্ধু হিসাবে আমন্ত্রিত ছিলেন দেবজ্যোতি চৌধুরী। সবাই যখন নানা কথা ভাবছেন। তখনই তাঁর নানা আচরণ মনে পড়ায় পরিবারের এক সদস্যার সন্দেহ জাগে। পুলিশকে তা জানান হয়।
এদিকে মেমারি থানার পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে পরিবারের এক সদস্যের বন্ধু হিসাবেই দেবজ্যোতি উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, ঘটনাস্থলে পুলিশের উপস্থিতি দেখে ততক্ষনে গা ঢাকা দিয়েছেন। খোঁজ পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই ভেঙে পড়েন দেবজ্যোতি। পরে তাঁর কাছে থেকে উদ্ধার হয় দেবীর চুরি যাওয়া গহনাগুলি। এরপরই মেমারি থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার তাকে বর্ধমান আদালতে তোলা হয়েছে।
জানা গেছে, দেবজ্যোতির বাড়ি বর্ধমানের খোশবাগানে। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার পুজো দেখতে এসেছিলেন তিনি। পুজোর নিমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে এসে পুজোর শেষে পরিবারের বিশেষ বন্ধু কখন যে ঠাকুরের গহনা চুরি করলেন তা কেউ বুঝেও উঠতে পারেননি। তিনি ধরা পড়ে গেলেন পুলিশের জালে।