পূর্ব বর্ধমান: ভোটের মুখে ফের উত্তপ্ত বর্ধমান পুর এলাকা। ক্লাবের নামে তোলাবাজির অভিযোগ ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়াল বর্ধমান পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে বাতানপাড়ায়। অভিযোগ, চার চাকার গাড়ি, বাইক, টোটোতে ভাঙচুর চালানো হয়। ঘটনায় দু’পক্ষের দু’জনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ঘটনাস্থলে যান বর্ধমান থানার আইসি সুখময় চক্রবর্তী। সঙ্গে বিশাল পুলিশবাহিনী ও র্যাফ। লাঠি উঁচিয়ে ধাওয়া করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। গত দু’মাস আগে স্থানীয় এক বাসিন্দার কাছ থেকে বাড়ি করার জন্য কয়েক হাজার টাকা চাওয়া হয়। তারই প্রতিবাদ করেন শেখ সেলিম নামে এক যুবক বলে অভিযোগ। এরপরই সোমবার এলাকার একটি ক্লাবের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন সেলিম। অভিযোগ, পথ আটকে সেখানে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়। এমনকী বাড়িতে ঢুকে তাঁকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। শেখ সেলিমের বাড়ির এক মহিলা সদস্যের গায়েও হাত তোলার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, এই গোলমাল নতুন নয়। বহুদিন ধরেই এলাকায় একদল দাপাদাপি করছে। এলাকার তৃণমূল কর্মী শেখ হাবুলের অভিযোগ, শেখ তোতা নামে এক যুবকের অনুগামীরা দীর্ঘদিন ঘরে এলাকায় তোলাবাজি করছে। টাকা দিতে না পারলেই হুজ্জুতি করা হয়। সাধারণ টোটো চালক থেকে এলাকার বাসিন্দা, বাদ যান না কেউই। শেখ হাবুলের দাবি, তোতাকে মদত দেয় বিজেপি ও সিপিএম।
২৭ তারিখ ভোট। তার আগে এই রাজনৈতিক আকচাআকচি ঘিরে শুরু হয়েছে চাপানউতর। বিজেপির অভিযোগ, এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তোলাবাজি, এলাকার দখল নিয়ে ঝামেলার ফল। যদিও জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও প্রশ্নই নেই তৃণমূলের অন্দরে। পুলিশকে বলা হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা নিতে।
আক্রান্ত শেখ সেলিমের কথায়, “এখানে একজন পাঁচিল দিচ্ছিলেন বাড়ির জন্য। ওনার কাছে টাকা চাইছিল পিন্টু, আসগররা। ক্লাবে থাকে ওরা। আমি বলেছি এভাবে একজন মাস্টারমশাইকে টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিস এটা ঠিক হচ্ছে না। এরপরই দোকানে দু’ একবার এসে আমাকে বলেছে দেখে নেবে। এরমধ্যেই সুকান্ত স্মৃতি সংঘ ক্লাবের পাশ দিয়ে আসছিলাম, আমাকে পিন্টু বলছে বেশি বাড়াবাড়ি করছিস তুই। আমি বললাম, একটা মানুষকে টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিস সেটাই বলেছি। এতে অন্যায় কোথায়! এরপর আমি বাড়ি ঢুকতে না ঢুকতেই ওরাও আসে। চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে। নোংরা ভাষায় কথা বলছিল। আমি বেরোতেই আমাকে ঠেলে ফেলে দিল। মেয়েদেরও মেরেছে।”
শেখ হাবুলের দাবি, “আমরা বহুদিন ধরে তৃণমূল করি। শেখ তোতা, শেখ পিন্টু, শেখ আসগররা এখন আমাদের এলাকাটাকে সন্ত্রস্ত করে রেখেছে। সন্ধ্যাবেলা সাধারণ মানুষ বেরোতে পারে না। সকলকে ধরে ধরে টাকা চায়। ৫০০, ১০০০ টাকা চায়। ওরা বিজেপি, সিপিএম করে। আমাদের তৃণমূলের ছেলেদের ঘর ভেঙেছে। কিছুজনকে পাড়া ছাড়া করেছে।” যদিও তোলাবাজি ও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শেখ তোতা।
আরও পড়ুন: TMC Candidate List: নির্দলদের ৪৮ ঘণ্টা সময় দিল তৃণমূল, এরপরই দল থেকে বহিষ্কার!