পূর্ব বর্ধমান: দিদির মৃতদেহ আগলে ঘরে বসে থাকার অভিযোগ উঠল বোনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, দিদির নিথর দেহ নিয়ে একই বিছানায় রাতেও থেকেছেন বোন। পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থানার কৃষ্ণবাজার কলেজমোড়ের এই ঘটনা আরও একবার উস্কে দিল কলকাতার রবিনসন স্ট্রিটের স্মৃতি। স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন এলাকায় দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিল। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। এরপরই পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন চোখ কপালে ওঠার মতো দৃশ্য। বিছানায় পড়ে রয়েছে মৃতদেহ। পাশেই বসে নির্বিকার বোন। পুলিশ এদিন মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়। একইসঙ্গে ওই বোনের চিকিৎসারও ব্যবস্থা করা হয় মেমারি পুলিশের তরফে। তবে এদিন বারবারই ওই বোন বলছিলেন, কেউ বা কারা তাঁর বোনকে মেরেছে। সবদিক খোলা রেখেই শুরু হয়েছে তদন্ত।
জানা গিয়েছে, নিহত ওই মহিলার নাম সুপ্তিকণা কোলে। বয়স ৬১ বছর। মেমারির কৃষ্ণবাজার কলেজ মোড় এলাকায় সুপ্তিদেবীদের যে বাড়ি, সেটি দোতলা। কিন্তু বাড়ির ভিতরে ঢুকলেই একটা গা ছমছম পরিবেশ। বোনের বয়সও দিদির থেকে খুব কম নয়। এলাকার লোকজন জানান, খুব প্রয়োজন ছাড়া দুই বোন বাইরে বেরোতেন না। এমনকী পাড়া পড়শির সঙ্গেও সম্পর্ক তেমন ছিল না।
এলাকার লোকজনের কথায়, বেশ কিছুদিন হল দুই বোনের কাউকেই বাড়ির বাইরে দেখা যায়নি। এরইমধ্যে বুধবার রাত থেকে কেমন একটা বাজে গন্ধ বের হতে থাকে ওই বাড়ি থেকে। বাড়ির আশেপাশে গেলেই গা গুলিয়ে উঠছিল। তাতেই সন্দেহ হয় এলাকার লোকজনের। পুলিশকে খবর দেওয়া হলে তারা এসে দেখেন একজন ঘরের ভিতর মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা পুস্পিতা ঘোষের কথায়, “সুপ্তিদেবীর বাবা রয়েছেন। তিনি বনগ্রামে থাকেন। দুই মেয়ের জ্বালাতনেই চলে গিয়েছেন। বাবা আশ্রমে থাকেন। মনে হচ্ছে চার পাঁচদিন আগে মারা গেছেন। বারো মাস জানলা দরজা বন্ধ করে থাকে। কারও সঙ্গে কথা বলে না। স্বাভাবিক ব্যবহার করে না। দু’জনই বিয়ে করেনি। আরও দু’টো দিদি ছিল। ওদের বিয়ে হয়ে গেছে। এখানে গ্রামেই বনগ্রামের আশ্রমের শাখা আছে। সেখান থেকে ওদের খাবার দেয়। এই যে তিন চারদিন ধরে খাবার নিতে আসে বোন, বলেনি একবারও দিদি বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে।” এদিকে বোনকে এ নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “দিদিকে যারা মেরেছে তারা বলতে পারবে তারা কেন মেরেছে। আমি তো মরা দেহর সঙ্গে পাঁচদিন শুয়েছিলাম মহাব্বতকে লিয়ে।”