বর্ধমান: মাত্র কয়েক মিনিটেই যেন শ্মশানপুরীর চেহারা নিয়েছে আস্ত একটা ট্রেন। যে ট্রেনের বার্থে নিশ্চিন্তে গা এলিয়ে দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছনোর কথা যাত্রীদের, সেই ট্রেনের অন্দরে চাপ চাপ রক্ত। তারপাশে শুধুই হাহাকার। কেউ কেউ এতক্ষণে জেনে গিয়েছেন আত্মীয়ের মৃত্যুসংবাদ। কেউ কেউ জানতেই পারছেন না, কোথায় গেল তাঁর স্বজন! সেই উৎকন্ঠার ছবিই ধরা পড়ল পূর্ব বর্ধমান জেলার বড়শুলে। পেটের টানেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন সফিক। ২৪ ঘণ্টা হতে চলল, তাঁর কোনও খবরই পাচ্ছে না পরিবার।
অভিশপ্ত করমণ্ডল এক্সপ্রেসে ছিলেন সফিক কাজী। পেটের তাগিদে রাজমিস্ত্রির জোগাড়ে হিসেবে কাজ করার জন্য ভিনরাজ্যে যাচ্ছিলেন তিনি। তাঁর এক সঙ্গীকে নিয়ে ওই ট্রেনে চাপেন শুক্রবার বিকেলে। বিকেল ৩টে ২০ মিনিট নাগাদ শেষবার ভিডিয়ো কলে কথা হয়েছিল সফিকের স্ত্রীর সঙ্গে। তারপর আর কথা হয়নি। সন্ধ্যার পর দুর্ঘটনার খবর আসে। কিন্তু খবর আসেনি সফিকের। আদৌ বেঁচে আছেন কি না, সেটাও জানেন না স্ত্রী শিল্পী খাতুন।
বাড়িতে রয়েছে পাঁচ বছরের এক সন্তান রয়েছে। সফিকের খোঁজে বাড়ি থেকে দুর্ঘটনাস্থলের দিকে হয়েছেন সফিকের বাড়ির লোকজন। বাবা উজির কাজি জানান, কাটোয়ার বরমপুরের রাজমিস্ত্রী নূর মহম্মদের সঙ্গে চেন্নাইয়ে রাজমিস্ত্রীর জোগাড়ের কাজে যাচ্ছিলেন সফিক।
ঘটনা আহত হয়েছেন নূর মহম্মদ। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, নূরও খোঁজ দিতে পারছেন না সফিকের। খোঁজ না মেলায় স্বাভাবিক ভাবেই দুশ্চিন্তায় গোটা পরিবার।