
কাটোয়া: স্কুলে বসছে হাটবাজার। রমরমিয়ে চলছে কেনা বেচা। দেদার বিকোচ্ছে গরম গরম চপ,বেগুনি।বিক্রি হচ্ছে সবজি, মশলাপাতি, শাড়ি,পোশাক। আছে ক্রেতাদের ভিড়। শুধু নেই স্কুলে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক শিক্ষিকা। একদিকে যখন নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে চাকরি জন্য শ’য়ে শয়ে শিক্ষক রাস্তায়, সেই সময় স্কুলের এই ছবি বাড়িয়েছে বিতর্ক।
জানা গিয়েছে, গ্রামের কয়েকজন বন্ধ স্কুলে হাট বসিয়েছে। হাটের ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, আগে গ্রামের রাস্তায় হাট বসত। স্কুল বন্ধ হওয়ায় এখানে হাট বসছে। স্কুল চালু হলে হাট বসা বন্ধ হয়ে যাবে। যদিও স্কুলে হাট বসছে তা জানেন না স্কুল পরিদর্শক সুরজিৎ মাল। তিনি টিভি ৯ বাংলাকে ফোনে জানান, স্কুলে শিক্ষক না থাকায় বন্ধ রয়েছে স্কুল। শিক্ষক নিয়োগ হলেই ফের চালু হবে স্কুলটি। আর হাট বসার বিষয়টিও খোঁজ নেবেন।
দু’বছর আগে শিক্ষকের অভাবে ভাল্যগ্রাম জুনিয়র হাইস্কুলটি বন্ধ হয়ে যায়। এখন দ্বিতল স্কুলটি পড়ে পড়ে এক প্রকার নষ্ট হচ্ছে। সেখানে নষ্ট হচ্ছে স্কুলের বেঞ্চ, চেয়ার,টেবিল। ভেঙে পড়েছে ক্লাস রুমের দরজা,জানলা। রাত হলেই দরজা ভাঙা ক্লাসরুমে অবাধ প্রবেশ। এর উপর স্কুল বারান্দায় ও স্কুল চত্বরে গ্রামীণ হাট বাসায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে স্কুল ভবন।
২০১৫-২০১৬ বর্ষে স্কুলটি চালু হয়। দু’জন গেস্ট টিচার দিয়ে শুরু হয় পঠন পাঠন। কয়েক মাস যেতেই দেখা দেয় শিক্ষকের সমস্যা। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত দেড়শোর বেশি ছাত্রছাত্রীরা বাধ্য হয়েই দূরের স্কুলে ভর্তি হয়। গত আড়াই বছর আগে তালা পরে যায় স্কুলে। এখন এই পরিত্যক্ত স্কুলে প্রতি মঙ্গলবার বসে গ্রামের হাট। স্কুলের বারান্দায় বসেছে তেলেভাজার দোকান, মশলা ও শাড়ি পোশাকের দোকান। স্কুল চত্বরে বসা হাটে বিক্রি হচ্ছে নানা সবজি-মাছ। গ্রামবাসীদের দাবি গ্রামের পড়ুয়াদের কথা ভেবে চালু করা হোক স্কুলটি।
বিজেপির কটাক্ষ, স্কুলে চপ শিল্প হবে, এটাই স্বাভাবিক। ছাত্র শিক্ষক থাকবে না। এই সরকার না যাওয়া পর্যন্ত এই ব্যবস্থা বদল হবে না। বিজেপি কাটোয়া সাংগঠনিক সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য সরকারের শিক্ষা ব্যবস্থার কোনও ঠিক নেই। পরিকল্পনার অভাব। এই সরকার চায় না বাংলার মানুষ শিক্ষিত হন।” চপ বিক্রেতা দেবব্রত সামন্ত বলেন, “এখানে আমাদের বসতে বলা হয়েছে। তাই বসছি। আর স্কুল তো এখন চলে না।” তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, “হাট গ্রামের ভিতরে ছিল। লকডাউনের সময় মেইন রোডে হাট বসে। তারপর যাতায়াতের অসুবিধার জন্য স্কুলে হাট বসিয়ে দিয়েছি। এরপর যদি স্কুল চালু হয় তাখন হাট অন্য জায়গায় বসবে। ”