
কালনা: বেহাল রাস্তা, আসতে চাইছে না কোনও অ্যাম্বুলেন্স। বাধ্য হয়ে রোগীকে খাটিয়াতে শুইয়ে হাসপাতালের পথ ধরেছিলেন পরিজনেরা। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি। বাঁচানো যায়নি রোগীকে। কয়েকদিন আগে এই ছবি দেখা গিয়েছিল মালদহে। ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল জেলার নাগরিক মহল থেকে রাজনৈতিক মহলে। এবার যেন উত্তরবঙ্গের সেই একই ঘটনার প্রতিচ্ছবি দেখা গেল দক্ষিণবঙ্গে। অর্থের অভাবে অ্য়াম্বুল্যান্স না পেয়ে হাসাপাতালের স্ট্রেচারে শুইয়ে রোগীকে ভিড়ে ঠাসা রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হল সিটি স্ক্যান করাতে। এ ছবি সামনে আসতেই প্রশ্নের মুখে হাসপাতালের ভূমিকা।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাতে সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় ট্রাকের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন সাহার আলি। তাঁকে রাতেই ভর্তি করা হয় কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। এদিন সেই রোগীকে সিটি স্ক্যান করতে বলেন চিকিৎসকরা। ঘটনায় রোগীর এক আত্মীয় বলছেন, “পয়সা নেই তো আমাদের। কী করব! তাই ওইভাবে নিয়ে গিয়েছি। টোটোতে নিয়ে যাব ভেবেছিলাম। কিন্তু, ও বসতে পারত না। তাই এ ভাবে নিয়ে গিয়েছি।”
এই ছবি ঘিরেই শোরগোল চলেছে মালদহে
যদিও ভুল বোঝাবুঝির কারণেই গাড়ির ব্যবস্থা করা যায়নি বলে মত হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার গৌতম দাসের। তিনি বলছেন, “আমাদের হাসপাতালে অনেক টেস্ট হয় না। অনেক সময় সেই টেস্টগুলি বাইরে থেকে করতে হয়। প্রত্যেক ওয়ার্ডে একটা রেজিস্টার খাতা দেওয়া আছে। সেখানে পেসেন্ট পার্টি সই করে বাইরে টেস্টের প্রয়োজন পড়লে রোগীকে নিয়ে যেতে পারেন। যে রোগীর সঙ্গে এটা হয়েছে তাঁর সিটি স্ক্যানের প্রয়োজন ছিল। ওরা সই করে নিয়ে গিয়েছে। আমাদের সরকারি গাড়ি আছে, হাসপাতালের গাড়ি আছে। আমাদের বললে আমরা গাড়ির ব্যবস্থা করে দিই। এই ক্ষেত্রে একটা বোঝাপড়ার ভুল হয়েছে বলে মনে হয়। আমাদের কোনও কর্মীর কাছে গাড়ির কথা বললে আমরা দ্রুত তার ব্যবস্থা করে দিতে পারতাম। তবে যেটা হয়েছে সেটা খুবই অমানবিক।” তবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি ভবিষ্যতে আর যাতে এ রকম কোনও ঘটনা না ঘটে সেদিকটিও খেয়াল রাখা হবে, ভালভাবে দেখা হবে রেজিস্টার খাতা। জানাচ্ছেন হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার। শেষ পাওয়া আপডেটে জানা যাচ্ছে এ ঘটনায় ইতিমধ্যেই নিরাপত্তারক্ষীদের শোকজ করার নির্দেশ দিয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের CMOH জয়রাম হেমব্রম।