খাগড়াগড়: পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayet Election) যত এগিয়ে আসছে। বাড়ছে তত উন্মাদনা। ঘর গোছাতে ব্যস্ত প্রতিটি দল। এই পরিস্থিতিতে প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল (TMC Clash)। খাগড়াগড়ে শাসকদলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে নাম জড়ালো বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাসের। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন বর্ধমান ১ ব্লকের সভাপতি কাকলি তা।
পূর্ব বর্ধমানের খাগড়াগড়ে শাসকদলের গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয় খাগড়াগড়। মারামারিতে সরাইটিকরের পঞ্চায়েত সদস্য সহ দু’পক্ষের তিন চারজন জখম হয়। তাঁদের ভর্তি করা হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। রাত্রিবেলা বর্ধমান থানার পুলিশ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করে। রবিবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে তোলা হয়।
জেলা সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মহম্মদ হোসেন জানান, “চুড়ির বকরা নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে লড়াই এখন নিত্যদিনের ঘটনা। পুলিশ শাসকদলের দলদাসে পরিণত হয়েছে। তৃণমূল দুষ্কতীদের দলে পরিণত হয়েছে। যে রাজ্যে এমন হয় সেখানে মানুষ আতঙ্কে থাকবে এটাই স্বাভাবিক।” বর্ধমান ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি কাকলি তা বলেন, “খাগড়াগড় এমনিতেই খুব সেনসেটিভ জায়গা। আমরা খুব সাবধানে থাকি। তাই ওখানে আমরা কোনও মিটিং করি না।” তাঁর আরও অভিযোগ এলাকায় বিধায়ক খোকন দাস কর্মসূচি করলেই পরদিন এলাকার পুরনো তৃণমূল কর্মীরা আক্রান্ত হয়। কালও তাই হয়েছে। এলাকার মানুষ ভীত, আতঙ্কিত। অনেক মানুষই যাঁরা এলাকা থেকে বাড়ি ঘর বিক্রি করে অন্যত্র যেতে চাইছে সেকথাও স্বীকার করে নেন ব্লক তৃণমূল সভাপতি।” জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “ভাগবাটোয়ারা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ঝামেলা।এতে এলাকার বাসিন্দারা সমস্যায় পড়ছে। তারা এলাকা ছাড়তে চাইছে।”
উল্লেখ্য, গত এক বছরে এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে বারে বারে অশান্তি হয়েছে খাগড়াগড়ে। বেশ কয়েকদিন এলাকা শান্ত থাকার পর শনিবার সন্ধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ফের সংঘর্ষ বাধে। ঘটনায় জখম সরাইটিকর পঞ্চায়েত সদস্য শেখ ফিরোজ দাবি করেন এলাকার কয়েকজন দুস্কৃতী তাকে মারধর করে।শেখ ফিরোজের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা আহমেদ আলি মণ্ডলের দাবি, আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিট পাবে না বলেই তাঁদের উপর হামলা করেছে শেখ ফিরোজ। এলাকার বাসিন্দারা ফিরোজের দলবলকে একদম পছন্দ করে না।
শনিবার রাতের পর রবিবারও এলাকা থমথমে। পুলিশ পিকেট আছে। যাতে আর নতুন করে এলাকায় কোনও অশান্তি না হয়। ২ ফেব্রুয়ারী খাগড়াগড়ের পাশে গোদার মাঠে মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক সভা করবেন। তবে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস দলীয় কোন্দল মানতে চাননি। তিনি বলেন, “একটি ক্লাব নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। তবে একসঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। প্রশাসন এর ব্যবস্থা নেবে। যাঁরা বিষয়টি নিয়ে দলকে টানতে চাইছে তাঁরা ঠিক করছে না।” তবে, এই বিষয়ে বিধায়ক খোকন দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।