বর্ধমান: তৃণমূলের অন্দরে নবীন ও প্রবীণদের মধ্যে ঠোকাঠুকির তত্ত্ব উঠে আসছে গত কয়েকদিন ধরে। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি পুরনো চাল ও নতুন চাল… দুই চালই চান। তারপরও ঠোকাঠুকি লেগেই ছিল। একের পর এক মন্তব্য। তাও আবার দলের প্রথম সারির নেতাদের মুখ থেকে। নবীন-প্রবীণ বিতর্কের মাঝেই এবার নয়া তত্ত্ব তৃণমূল যুবর রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষের গলায়। নবীন-প্রবীণ নয়, বরং আসল তৃণমূল ও নকল তৃণমূলের ফারাক খুঁজে বের করার উপরেই বেশি জোর সায়নীর। বুধবার বর্ধমানে এক দলীয় কর্মসূচি থেকে সায়নী বললেন, ‘আমি নবীন-প্রবীণ কিছু জানি না। আমি আসল-নকল চিনি।’
রাজ্য রাজনীতির পরিসরে অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের আগমন খুব বেশি দিনের নয়। তবে দলের যুব সংগঠনের ব্যাটন এখন তাঁরই হাতে। যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রীর গুরু দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। আজ নবীন-প্রবীণ বিতর্ক নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্ন সায়নীর সোজাসাপ্টা জবাব, ‘আমি তো অত্যন্ত নবীন।’ এরপরই সভামঞ্চে উপস্থিত বাকিদের দেখিয়ে বললেন, ‘এখানে অনেক নবীন রয়েছেন, সঙ্গে অনেক প্রবীণও রয়েছেন। সবাই একসঙ্গে বসে রয়েছেন। আমি নবীন-প্রবীণ কিছু জানি না। আমি আসল-নকল চিনি।’
কারা আসল তৃণমূল সেই ব্যাখ্যাও এদিন দিলেন সায়নী। তৃণমূল যুবর রাজ্য সভানেত্রীর কথায়, ‘যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মানবসেবায় নিজেদের নিয়োজিত রাখতে চান, যাঁরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কঠিন লড়াইকে প্রত্যক্ষ করছেন, তাঁর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে চান… তাঁরাই আসল তৃণমূল।’ তবে নকল তৃণমূলী কারা, সেই ব্যাখ্যা তিনি আর দেননি।
তাহলে কি তৃণমূলের ভিতরে নকলদের চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে? প্রশ্ন করায় সায়নীর জবাব, যাঁরা যাঁরা মাঠে রয়েছেন, তাঁরা ঠিক সময়ে নকলদের চিহ্নিতকরণের কাজ করে নেবেন।
উল্লেখ্য, তৃণমূলের অন্দরে সাম্প্রতিক এই বিতর্কের শুরুটা হয়েছিল সুব্রত বক্সির এক মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কুণাল ঘোষের প্রতিক্রিয়া ঘিরে। তারপর থেকে ক্রমেই ঝাঁঝ বেড়েছে এই বিতর্কে। শেষে দলীয় মুখপাত্র কুণাল ঘোষও গতকাল দলনেত্রীর সুরে সুর মিলিয়ে বলেছেন, নবীন ও প্রবীণ উভয়েরই প্রয়োজন দলে। কিন্তু এরপরও বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না। বিরোধীরা নাগাড়ে খোঁচা দিয়ে যাচ্ছে এই নবীন-প্রবীণ বিতর্ক ঘিরে। এসবের মধ্যেই এবার আসল তৃণমূল ও নকল তৃণমূলের তত্ত্ব সায়নীর গলায়।