পূর্ব বর্ধমান: আঁতকে ওঠার মতো ঘটনা। বাচ্চা ছেলে স্কুলে গিয়েছিল। এক বন্ধু তাকে হজমি গুলি খেতে দেয়। আর তা খাওয়ার পরই নাগাড়ে বমি। শরীর ক্রমেই নেতিয়ে পড়ে ৯ বছরের বিনয় মণ্ডলের। হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি। মৃত্যু হয় বিনয়ের। পরে জানা যায়, হজমি ভেবে বিনয় যা খেয়েছিল, তা কীটনাশকের কোনও বড়ি হতে পারে। এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ থানার কুলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বিনয়ের বাবা নীরদবরণ মণ্ডল জানান, ছেলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত। বুধবার ছেলে সকাল ১০টা নাগাদ স্কুলে গিয়েছিল। এক বন্ধু তাদের হজমি খেতে দেয়। বাকিরা তখনও মুখে তোলেনি। বিনয় সঙ্গে সঙ্গে মুখে দিয়ে দেয় সেটি। খাওয়ার পরই শুরু হয় বমি। এদিকে বন্ধুর এমন অবস্থা দেখে বাকিরা ওই বড়ি ফেলে দেয় মাটিতে। কিন্তু বিনয়ের ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে।
বিনয়ের পরিবার সূত্রে খবর, হেড স্যরের কাছে খবর যায়। শুনেই ছুটে আসেন তিনি। প্রাথমিকভাবে যা যা করার করেন প্রধান শিক্ষক। কিন্তু অবস্থা খারাপ হতে শুরু করায় প্রথমে স্থানীয় কুলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান শিক্ষকরা। ততক্ষণে খবর দেওয়া হয় বিনয়ের বাড়িতে। খবর পেয়েই ছুটে যান বিনয়ের বাবা। অবস্থার অবনতি হওয়ায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকরা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন বিনয়কে। দুপুরেই বিনয়কে নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তার চিকিৎসা শুরু হলেও বুধবার গভীর রাতে বিনয়ের মৃত্যু হয়।
কুলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুহাশিসরঞ্জন দত্ত বলেন, “স্কুল চলাকালীন বাচ্চাটি বমি করছিল। প্রথমে বমি পরিষ্কার করা হয়। বিনয়ের জামায় বমি লেগেছিল। আমি তা পরিষ্কার করছিলাম। তখন আবার ও বমি করে। সেই সময় একটা বাচ্চা বলে মাটির মতো কিছু একটা খাওয়ার পর বমি করছে। তবে ওটা থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। তখন ভয় পেয়ে বিনয়কে কুলে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করি।” বিনয়ের বাবা মুড়ির কারখানায় কাজ করেন। দুই দিদির পর ছোট ভাই। পরিবারের ছোট্ট এই সদস্যর এমন পরিণতিতে শোকে পাথর বাড়ির লোকেরা। চোখ ছলছল পাড়ার লোকজনেরও।