Egra Blast: এগরা বিস্ফোরণে মূল অভিযুক্ত ভানু বাগের মৃত্যু
Purba Medinipur: গত মঙ্গলবার এগরার খাদিকুলে এক বাজির কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। এই কারখানা একেবারে বেআইনিভাবে চলছিল বলে অভিযোগ। এই কারখানার মালিক ছিলেন ভানু বাগ।
পূর্ব মেদিনীপুর: বিস্ফোরণে (Egra Blast) গুরুতর জখম কৃষ্ণপদ বাগ ওরফে ভানু বাগের মৃত্যু। এগরার খাদিকুল গ্রামের বিস্ফোরণে মূল অভিযুক্ত ভানু বাগ ওড়িশার কটকে এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বৃহস্পতিবার রাতে। রাত ২টো নাগাদ মারা গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার অমরনাথ কে। অন্যদিকে শুক্রবার এগরা থানায় আনা হচ্ছে ভানুর ছেলে পৃথ্বীজিৎ বাগকে। তাঁকে আদালতে তোলা হবে। গত মঙ্গলবার এগরার খাদিকুল গ্রামে বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। তাতে ৯ জনের মৃত্য়ু হয়। যে কারখানায় বিস্ফোরণ হয়, সেটির মালিক হিসাবে উঠে আসে ভানু বাগের নাম। এরপর তদন্ত যত এগোয়, একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসতে থাকে এই ভানুর নামে। অন্যদিকে এগরাকাণ্ডে অবশেষে বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের। কাঁথি আদালতের অনুমতি নিয়ে মামলা করল সিআইডি। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণের পরই এই মামলা দায়ের। খুন ও খুনের চেষ্টার ধারাও যুক্ত হয়েছে। ভানু-সহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
প্রায় ৩০ বছর ধরে খাদিকুলে বাজির ব্যবসা ছিল ভানুর। এগরায় বাজির রাজাও বলত তাঁকে কেউ কেউ। তাঁর হাতের তৈরি তুবড়ি, রকেট, গাছবোমা, হাউইয়ের ব্যাপক সুখ্যাতি ছিল জেলায়। তবে ধীরে ধীরে সেই বাজি তৈরির নেশাই হয়ে উঠল মারাত্মক। সেখান থেকেই গ্রামে অবৈধ বাজির কারখানা গড়ে ফেললেন। সরকারি প্রকল্পে কাজ না পাওয়া লোকজনকে টাকার বদলে যুক্ত করতেন নিজের ব্যবসায়। রোজ কাজ রোজ টাকা। পেটের দায়ে ভানুর কারখানায় কাজ করার লোকের অভাব হতো না।
এর আগেও তাঁর কারখানায় বিস্ফোরণ হয়। মারা গিয়েছিলেন ভানুর ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী। তবে মৃত্য়ু কোনওদিন থামাতে পারেনি ভানুকে। আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিলেন। সেই বাজির বিস্ফোরণে মঙ্গলবার যখন এতগুলো মানুষ মারা গেলেন, ভানুরও শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। তবে গা ঢাকা দিতে ভানুর মুন্সিয়ানা নজর কেড়েছে আগেও। এবারও তার অন্যথা হয়নি। বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পর সারা গ্রাম যখন গেল গেল রবে আর্তনাদ করছে, তখন ভানু কিন্তু শরীরের জখম নিয়েই কায়দা করে গ্রাম থেকে পালান।
গ্রামবাসী বলেছিল, বাইকে করে ওড়িশা পালান ভানু। সঙ্গে স্ত্রীও ছিলেন। বাইকের মাঝখানে বসেছিলেন ভানু। পিছনে আর একজন পাখার হাওয়া করতে-করতে গ্রাম থেকে ওড়িশার দিকের রাস্তা ধরেন। এক এলাকাবাসী বলেন, “আমি দেখেছি পালিয়ে যেতে। ওর শরীর পুড়ে গিয়েছে। মোটরবাইকে চারজন ছিল। একজন মহিলাও ছিলেন।” পরে পুলিশ জানতে পারে কটকে এক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সেখানেই পুলিশের নজরবন্দি ছিলেন তিনি। তবে বয়সটা বেশি হওয়ায়, ৭০ শতাংশ জখম সারিয়ে বাঁচা সহজ ছিল না। বৃহস্পতিবার রাতেই মারা যান তিনি।