
বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদ: সম্পর্কের কথা অস্বীকার প্রেমিকের। তাই, প্রেমিকের বাড়ির উঠোনেই বিষপান করে আত্মহত্যা করলেন এক তরুণী। ঘটনাটি মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের। মৃতার নাম সামিলা খাতুন (২৬)। শনিবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতার পরিবারের অভিযোগ, বিষ খেতে দেখলেও সামিলাকে আটকায়নি প্রেমিকের বাড়ির লোকজন।
জানা গিয়েছে, সামিলার আগে বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু, গ্রামেরই একটি ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ার পর সেই বিয়ে ভেঙে যায়। সামিলার প্রেমিক মালয়েশিয়ায় কাজ করেন। সম্প্রতি বাড়ি ফেরেন। সামিলার পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের কথা বললেই এড়িয়ে যেতেন ওই যুবক। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর দুই পরিবারকে নিয়ে গ্রামে মীমাংসার চেষ্টা হয়। সেখানে সামিলার সঙ্গে সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেন ওই যুবক।
মৃতার পরিবারের বক্তব্য, অপমান এবং মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে বিষের বোতল নিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে উপস্থিত হন সামিলা। প্রেমিকের বাড়ির উঠোনেই বিষ পান করেন। অভিযোগ, তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়লেও প্রেমিক বা তাঁর পরিবারের কেউ তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি। খবর পেয়ে ভরতপুর থানার পুলিশ গুরুতর অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার রাতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই শনিবার সন্ধ্যায় মৃত্যু হয় সামিলা খাতুনের।
মৃতার মামা শেখ কামাল বলেন, “আমার ভাগ্নির বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর গ্রামের একটি ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক হয়। ছেলেটি মালয়েশিয়ায় থাকত। তাদের সম্পর্কের কথা সবাই জানত। আমার ভাগ্নি বিয়ের কথা বললে এড়িয়ে যেত। বলত, পরে করব। আবার ছেলেটির বাবা-মা এসে আমার বোন ও ভাগ্নিকে মারধর করে। তারপর গ্রামে সালিশিসভা বসে। সেখানে ছেলেটি বলে, সে তার প্রথম স্ত্রীর সঙ্গেই থাকবে। আমার ভাগ্নিকে চেনে না বলে জানায়। তারপর আমার ভাগ্নি ছেলেটির বাড়ির সামনে গিয়ে বলে, বিষ খাব। ছেলেটি বলে, তুই খাবি তো খা। তারপরই আমার ভাগ্নি বিষ খায়। তার একটা ছোট ছেলে রয়েছে। ছেলেকে বিষ খাচ্ছি বলে দেখানোর পরও কেউ আটকায়নি।” যদিও এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।