পূর্ব মেদিনীপুর: আবাস যোজনার প্রাপ্ত সরকারি অর্থে ঘর না বানিয়ে অন্য খাতে খরচ! নন্দীগ্রামে (Nandigram) এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগের ভিত্তিতে ৪ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। যদিও, ধৃতদের দাবি, পরপর প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য ঘর বানানোর কাজ করা সম্ভব হয়নি। সরকার সময় দিলেই তাঁরা সে কাজ সম্পূর্ণ করবেন।
ঠিক কী অভিযোগ? নন্দীগ্রামের ১ নম্বর ব্লকের ভেকুটিয়া ও দাউদপুর এলাকার সকল গ্রামবাসীকেই আবাস যোজনার জন্য ২০১৯-২০২০ সালের প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু, অভিযোগ, সেই টাকা দিয়ে ঘর বানাননি ওই এলাকার চার বাসিন্দা। ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকের পক্ষ থেকে বাড়িতে বাড়িতে নোটিসও পাঠানো হয়। কিন্তু তারপরেও ওই চার বাসিন্দা বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেননি। অবশেষে, খোদ ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
নন্দীগ্রাম থানার আইসি তুহিন বিশ্বাস বলেছেন, “বাংলা আবাস যোজনার টাকা নিয়েও বাড়ি তৈরি করেননি বেশ কিছু গ্রামবাসী। সেই টাকা অন্য খাতে খরচ করা হয়েছে। খোদ বিডিও অভিযোগ করেছেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা চারজনকে গ্রেফতার করেছি। আশা করছি এরপর এই ধরনের ঘটনা ঘটবে না।”
যদিও গ্রেফতার হওয়া চার গ্রামবাসীই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, “আমরা কোনও নোটিস পাইনি। আবাস যোজনার টাকাও অন্য খাতে খরচ হয়নি। তবে, পর পর এতগুলো ঝড়ঝঞ্জার জন্য কাজ করতে পারিনি।”
গ্রেফতার হওয়া এক গ্রামবাসী বলেন, “আমফানে গোটা বাড়ি উড়ে গিয়েছিল। আমার আর হাতে কোনও টাকা ছিল না। তারপর, আবাস যোজনার যে প্রথম কিস্তির টাকা পেলাম, সেই টাকা দিয়ে কাজ করাতে পারিনি। আমফান গেল তো একের পর এক অন্য় দুর্যোগ। কীভাবে ঘরের কাজ করব! তবে সরকার সুযোগ দিলে অবশ্যই আমরা ফের ঘর তৈরি করব। ”
জানা গিয়েছে, ধৃতদের আজ হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হবে। বিভিন্ন সময়েই আবাস যোজনা নিয়ে নানা বিতর্ক ও প্রতারণার ছবি সামনে এসেছে। কিছুদিন আগেই, নন্দীগ্রামের ২ নম্বর ব্লকের আমদাবাদ-১ নম্বর অঞ্চলে আবাস যোজনার গ্রাহকের টাকা জমা পড়েনি অ্যাকাউন্টে। উল্টে সেই টাকা গিয়েছে অন্য লোকের অ্যাকাউন্টে। প্রায় ৬০ হাজার টাকার বেশি প্রতারিত হন ওই গ্রামবাসী। ঘটনায়, পঞ্চায়েত প্রধান, বিডিও, এবং জেলাশাসকের কাছেও অভিযোগ জানান ওই গ্রামবাসী। এদিকে আবাস যোজনার টাকা নিয়ে এই বিতর্কের জেরে রাজনৈতিক শিবিরেও জোর তরজা শুরু হয়। তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি প্রলয় পাল বলেন, “কাটমানি না দেওয়ায় তৃণমূল নেতারা ঘর দেয়নি। ধরা পড়ার পরে ভুল স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছেন তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান।”
আরও পড়ুন: Dengue: শীতেও কমছে না সংক্রমণ, জেলায় ক্রমেই বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা