
নন্দীগ্রাম: কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তৃণমূলের ছাত্রনেতা। আবার প্রথম বর্ষের পড়ুয়া হয়েই সেই কলেজেরই গ্রুপ ডি অস্থায়ী কর্মী। কসবাকাণ্ড নিয়ে শোরগোলের মধ্যেই নন্দীগ্রাম সীতানন্দ কলেজে এই নিয়োগ নিয়ে উঠতে শুরু করল প্রশ্ন। একজন প্রথম বর্ষের পড়ুয়াকে কীভাবে অস্থায়ী কর্মী করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবিভিপি। ওই ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে কলেজে দাদাগিরিরও অভিযোগ উঠেছে। যদিও বিরোধীদের অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে চাইল না শাসকদলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি। কলেজে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে তাঁকে নিযুক্ত করা নিয়ে যুক্তিও দিলেন সুমিত মণ্ডল নামে শাসকদলের ওই ছাত্রনেতা। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলেন তৃণমূল নেতা তথা নন্দীগ্রাম সীতানন্দ কলেজ পরিচালনা সমিতির সভাপতি আবু তাহের।
সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়েছে। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে কলেজের অস্থায়ী কর্মীর বিরুদ্ধে। যিনি তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ। রাজ্যজুড়ে সেই ঘটনা নিয়ে শোরগোলের মধ্যেই নন্দীগ্রাম সীতানন্দ কলেজে তৃণমূলের ছাত্রনেতাকে গ্রুপ ডি অস্থায়ী কর্মী হিসেবে নিয়োগ ও তাঁর বিরুদ্ধে দাদাগিরির অভিযোগ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
সুমিত মণ্ডল বর্তমানে নন্দীগ্রাম সীতানন্দ কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি। তিনি প্রথম বর্ষের ছাত্র। তাঁকে নাকি গভর্নিং বডি-সহ কলেজ কর্তৃপক্ষ অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কলেজে নিয়োগ করেছে। বিতর্ক তৈরি হয়েছে তাঁর দাদাগিরি নিয়েও। কিছুদিন আগে এবিভিপির পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে নন্দীগ্রাম সীতানন্দ কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং এবিভিপির মধ্যে বচসা বেধেছিল। সেইসময় একটি সংবাদমাধ্যমের কর্মীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে এবং তাঁকে ঠেলে কলেজ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে এই সুমিত মণ্ডলের বিরুদ্ধে।
বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি গেরুয়া ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্ব। নন্দীগ্রাম সীতানন্দ কলেজে ABVP-র ছাত্রনেতা সৃজন ভুঁইয়া বলেন, “সুমিত মণ্ডল প্রথম বর্ষের ছাত্র হিসেবে কয়েক বছর কলেজে রয়েছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি। সে কী করে একটা কলেজের অস্থায়ী কর্মী হিসেবে নিয়োগ হতে পারে।” সুমিতকে অস্থায়ী কর্মীর দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি তোলেন তিনি।
এবিভিপি-র অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সুমিত মণ্ডল বলেন, “কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাল মনে করেছে, গরিব বাড়ির ছেলে হিসেবে তারা আমাকে একটা কাজের দায়িত্ব দিয়েছে। তবে আমি কোনও সরকারি বেতন পাই না। আমাকে কাজের মূল্য হিসেবে কলেজ কর্তৃপক্ষ একটা সাহায্য করে। সেই টাকায় আমি পড়াশোনা করি।” দাদাগিরির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। ইউনিয়ন রুম বন্ধ নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইউনিয়ন রুমে বসি আর না বসি, আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে রয়েছি। তাদের সবসময় সাহায্য করব।”
কলেজে ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে পরিচালন সমিতির সভাপতি আবু তাহের বলেন, “আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। অবশ্যই খতিয়ে দেখব। কয়েকদিন পর কলেজের পরিচালন সমিতির বৈঠক হবে। সেখানে আমরা এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব।”