
হলদিয়া: ভাড়া দেওয়া হয়েছে আবাস যোজনার (Pradhan Mantri Awas Yojana) বাড়ি। সেখানেই রাতারাতি তৈরি হয়ে গিয়েছে ওষুধের দোকান। হলদিয়া (Haldia) পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ক্ষুদিরাম নগর কলোনির বীরাঙ্গনা ব্লকের এই ঘটনা নজরে আসার পর নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন। ঘটনার তদন্তের জন্য প্রশাসনিক কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হলদিয়ার মহকুমা শাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায়। ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এই দুর্নীতির সঙ্গে তৃণমূল যোগ রয়েছে, অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।
সূত্রের খবর, বাড়িটি আরতি প্রধান নামের এক মহিলার। ২০১৮-১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে তিন লক্ষাধিক টাকা পান তিনি। স্বামীর বাড়িতে ঠাঁই না মেলার কথা জানিয়ে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া জমিতে তিনি তৈরি করেন আবাস যোজনার বাড়ি। স্থানীয় সূত্রের খবর, মাস চারেক আগে সেই বাড়ির সাজসজ্জা একেবারে বদলে যায়। তারপর সেই বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয় তমলুকের নিমতৌড়ির বাসিন্দা এক ব্যবসায়ীকে। মাসিক ৬ হাজার টাকা ভাড়া দেওয়া হয় সেই বাড়ি। রাতারাতি তৈরি হয়ে যায় ওষুধের দোকান। এ কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বাড়ি মালিক আরতিও। তিনি বলেন, “স্বামীর সঙ্গে আমার বনিবনা না থাকায় আমি আলাদা থাকি। বাড়িটি ভাড়া দিয়ে মাসে যে ৬ হাজার আয় হয়, তার সামান্য অংশ খরচ করে নিজের সংসার খরচ চালাই।” যদিও আরতির কথা সত্য নয় বলে দাবি করেছেন তাঁর প্রতিবেশীরা। তাঁদের বক্তব্য, “আলাদা নয়, স্বামীর সঙ্গেই থাকেন আরতি দেবী। হলদিয়ার একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন আরতি দেবীর স্বামী স্বপন প্রধান। সেখানে একটি কারখানায় কাজ করেন। তাঁদের পরিবারের অবস্থাও বেশ স্বচ্ছল।” তাঁদের দাবি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে স্ত্রীর নামে আবাস যোজনার বাড়ি বাগিয়েছেন স্বপন। ঘটনার তদন্তে দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
ঘটনা প্রসঙ্গে হলদিয়া পৌরসভার প্রশাসক সুপ্রভাত চ্যাটার্জি বলেন, “আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। আমরা খতিয়ে দেখছি। যদি কোনও ভুল হয়ে থাকে তবে অ্যাকশন নেওয়া হবে।” ওযুধের দোকানের কর্মচারী মনোজ গড়াই বলেন, “আমরা এ সম্পর্কে কিছু জানতাম না আগে। আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে চর্চা হতে জানতে পারি। তবে এই বাড়ির সামনে ভাড়া দেওয়া হবে বলে আগে নোটিস দেওয়া হয়েছিল। সেটা দেখেই আমাদের মালিক এই ঘরটি ভাড়া নিয়েছেন।” ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই আবাস দুর্নীতি নিয়ে শাসকদলকে ফের একবার কাঠগড়ায় তুলেছে বিজেপি। জেলা বিজেপি সহ-সভাপতি অসীম মিশ্র বলেন, “আবাস দুর্নীতি বাংলার সব জায়গায় হচ্ছে। যাঁরা প্রকৃত প্রাপক তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন। যাঁরা ঘর পাওয়ার কথা তাঁরা পাচ্ছেন না। উল্টে তৃণমূল নেতাদের আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পার্টির লোকেদের দেওয়া হচ্ছে। এটাই তো চলছে।”