জন্মেই মারণ করোনার শিকার! ৬দিনেই সুস্থ হয়ে মায়ের কোলে ফিরল একরত্তি

tista roychowdhury |

Jun 22, 2021 | 8:42 PM

চিকিৎসক প্রবীর ভৌমিক আরও বলেন, "গর্ভাবস্থায় অনেক মায়েরাই নিজেদের প্রতি যত্ন ঠিকভাবে নেন না। বিশেষ করে এই করোনাকালে, গর্ভবতী মায়েদের কোভিড প্রোটোকল মানা খুব জরুরি। আমরা বারবার সে বিষয়ে সতর্ক করি।"

জন্মেই মারণ করোনার শিকার! ৬দিনেই সুস্থ হয়ে মায়ের কোলে ফিরল একরত্তি
নিজস্ব চিত্র

Follow Us

পূর্ব মেদিনীপুর: বয়স মোটে একদিন। কিন্তু বিধি বাম! জন্মেই মারণ ভাইরাসের কবলে পড়েছিল একরত্তি। অবশেষে, কোলাঘাটের শুশ্রূষা শিশু সেবা নিকেতনে চিকিৎসকদের তৎপরতায় মাত্র ৬দিনেই করোনা মুক্ত হয়ে মায়ের কোলে ফিরে গেল শিশু। বাড়ির প্রথম সন্তান বেঁচে ফেরায় খুশি পাঁশকুড়ার সরাইঘাট গ্রামের ভুঁইয়া পরিবারও।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই শিশুর মা মিষ্টি ভুঁইয়া গর্ভাবস্থাতেই কোনওভাবে করোনা আক্রান্ত হন। কিন্তু, উপসর্গহীন হওয়ায় তিনি বুঝতেও পারেননি কখন তাঁর মধ্যে মারণ ভাইরাস প্রবেশ করেছে। গত সোমবার পাঁশকুড়ার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন মিষ্টিদেবী। কিন্তু, জন্মের সময় থেকেই শিশুটির কোনওরকম সাড়াশব্দ ছিল না। হতবাক হয়ে কোলাঘাটের শুশ্রূষা শিশু সেবা নিকেতনে একদিনের সন্তানকে বুকে আঁকড়ে ধরে নিয়ে যান ভুঁইয়া দম্পতি। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর শিশুটির শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। আর তাতেই সন্দেহ হয় চিকিৎসক প্রবীর ভৌমিকের। সঙ্গে সঙ্গে শিশুটির করোনা পরীক্ষার নির্দেশ দেন তিনি। দেখা যায়, সদ্য়োজাত করোনা পজিটিভ।

চিকিৎসক প্রবীর ভৌমিক বলেন, “মাতৃজঠরে থাকাকালীন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল ওই শিশু। আমরা অবাক হয়েছিলাম যে শিশুর শ্বাসকষ্ট এত প্রবল, তার সিআরপি স্বাভাবিকের থেকে যথেষ্ট বেশি ছিল। এই দেখেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিই শিশুটির করোনা পরীক্ষা করার। পরীক্ষা পরেই রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ফলে ভেন্টিলেশনে রেখেই চিকিৎসা করতে হয় আমাদের। এর আগেও কয়েকবার এরকম ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু খুব চ্য়ালেঞ্জিং একটা বিষয় ছিল আমাদের  কাছে। ছয় দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর আমরা বুঝতে পারি, বিপদমুক্ত হয়েছে ওই শিশু। মঙ্গলবার তাকে মায়ের কোলে দেওয়া হয়েছে।”

পাশাপাশি, চিকিৎসক প্রবীর ভৌমিক আরও বলেন, “গর্ভাবস্থায় অনেক মায়েরাই নিজেদের প্রতি যত্ন ঠিকভাবে নেন না। বিশেষ করে এই করোনাকালে, গর্ভবতী মায়েদের কোভিড প্রোটোকল মানা খুব জরুরি। আমরা বারবার সে বিষয়ে সতর্ক করি।” নিজের একরত্তি সন্তানকে ফিরে পাবেন এমন আশা করেননি মিষ্টি বা তাঁর স্বামী শান্তনু। শান্তনু বলেন, “আশা করিনি যে ছেলেটাকে বাঁচাতে পারব। আমরা আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম যে ও বাঁচবে। ডাক্তারবাবু ভগবান। তাই বেঁচে গিয়েছে আমার ছেলেটা।”

উল্লেখ্য, অতিমারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় সবচেয়ে খারাপ পর্ব পেরিয়ে সুস্থ হওয়ার পথে রাজ্য। একাধিক জেলায় সংক্রমণের হার নিম্নমুখী। মঙ্গলবারের করোনা বুলেটিনে দেখা যাচ্ছে, দৈনিক আক্রান্ত ২ হাজারের নীচে। রাজ্যের ১২ টি জেলায় করোনায় কোনও মৃত্যু হয়নি। সব জেলাতেই কমেছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। মঙ্গলবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে কোভিড বুলেটিনে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮৫২। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যের সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ২৩২ জন কমেছে। রাজ্যের বর্তমান সক্রিয় রোগীর সংখ্যা কমে হয়েছে ২২ হাজার ৫০৮ জন।

আরও পড়ুন: দিল্লির ‘পাওয়ার বৈঠকে’ ডাক পাননি, ‘পিকে আমাদের ভাগ্যবিধাতা নন’, কটাক্ষ অধীরের

 

Next Article