খেজুরি: পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি ২ নম্বর ব্লকের আলিপুর বাজারে শনিবার বিকালে সভা করেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই সভা থেকে তৃণমূলের সরকারের আমলে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি। “তৃণমূল দল ফ্যাক্টর নয়, সমস্যা মমতার পুলিশকে নিয়ে”- বিজেপি কর্মীদের আশ্বস্ত করে এমন দাবিও শনিবার করেছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। এই সভা করা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। খেজুরির আলিপুরে সভা করা নিয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল বলে অভিযোগ। জনসভার দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আদালতের নির্দেশে শেষমেশ সভা করে বিজেপি। সেই সভায় লোক হয়েছিল ১০ হাজারেরও বেশি। এই সভা থেকে ১০০ পরিবার বিজেপিতে যোগদানও করেন।
মমতা পুলিশের থেকে ব্রিটিশ পুলিশ অনেক শক্তিশালী ছিল, কিন্তু তবুও তারা কিছুই করতে পারেনি। খেজুরি আলিপুরের জনসভা থেকে এমনই আক্রমণ শানালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে তাচ্ছিল্য করে শুভেন্দু বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস কোন ফ্যাক্টর নয়, সমস্যা হচ্ছে মমতা পুলিশ। কারণ মিথ্যা মামলা দিয়ে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের ফাঁসাচ্ছে।” মমতা সরকারের পুলিশের প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেছেন, “ওসি বদল করে কোনও লাভ নেই। কিছুই হবে না। মমতা পুলিশের থেকে শক্তিশালী ছিল ব্রিটিশ পুলিশ। এরাও আমাদের দমাতে পারেনি।” তৃণমূলকে আক্রমণ করে তিনি বলেছেন, “তৃণমূল কয়লা, পাথর ও গরু খায়। নতুন করে আবার ব্যালট পেপারও খাচ্ছে। লোকসভা নির্বাচনে ইভিএমে ভোট হবে। তা খাওয়ার ক্ষমতা এদের নেই।”
পুলিশের ভূমিকার পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিভিন্ন ইস্যুতে সুর চড়িয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। লিপস অ্যান্ড বাউন্ড নিয়েও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে আক্রমণ করেছেন তিনি। খেজুরির এই ব্লকেই বিজেপির টিকিটে পঞ্চায়েত সমিতিতে জেতা প্রার্থী তৃণমূলে যোগদান করেন। এ বিষয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন শুভেন্দু। বিজেপির টিকিটে জিতে তৃণমূলে যোগ দেওয়া উদয় শঙ্কর মাইতির প্রসঙ্গে বলেন, “উদয় শংকর মাইতি ও একজন মহিলাকে দশ লাখ টাকা দিয়ে কিনেছে। দল পরিবর্তন করতে পারেন। কিন্তু তারও একটা পদ্ধতি রয়েছে। আমি ১৭ ডিসেম্বর বিধানসভা থেকে বিধায়ক পথ থেকে পদত্যাগ করে, তারপরে অন্য দলে যোগদান করেছিলাম। আমি উদয়ের (বর্তমান খেজুরি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি) বুথে গিয়ে মিটিং করব। এই ধরনের লোককে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করব।”
রাজ্যের কারা মন্ত্রী এবং পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূল নেতা অখিল গিরি বলেছেন, “শুভেন্দু অধিকারী ভয় পেয়েছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের ভোট হিসাবে করলে কাঁথি লোকসভা আসনে আমরা এক লক্ষের একটু কম ভোটে এগিয়ে আছি। সে জন্যই ভয় পাচ্ছেন। তাই কখনও তৃণমূলকে গাল দিচ্ছেন তো কখনও পুলিশকে। পুলিশকে আক্রমণ করে রাজনীতির চক্রান্ত করতে।”