
ভূপতিনগর বিস্ফোরণের জট ক্রমশ জটিল হচ্ছে। রাজনৈতিক চাপান-উতোর, মৃতের স্ত্রীর বয়াব বদলকে কেন্দ্র করে নাটক আরও চরমে পৌঁছেছে। একই সঙ্গে পুলিশের বিরুদ্ধে উঠেছে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ। শুক্রবার রাতে বিস্ফোরণের ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা কাটলেও জারি রইল প্রবল উত্তেজনা। সোমবার সকালে পুলিশ কুকুর নিয়ে তল্লাশি চালানো হয় বিস্ফোরণ স্থলে।

পুলিশ অনেক দেরিতে তদন্ত শুরু করেছে বলে দাবি গ্রামবাসীদের একাংশের। সোমবার রাজকুমার মান্না নামে মৃত তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন তদন্তকারীরা। বম্ব ডিটেকশন অ্যান্ড ডিসপোজাল স্কোয়াড যায় ঘটনাস্থলে। বেলা বাড়তেই উত্তেজনা চরমে ওঠে।

এদিন আচমকাই গ্রামে কয়েকজনকে প্রবেশ করতে দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়েন তৃণমূল কর্মীরা। তাঁদের দাবি, যাঁরা গ্রামে ঢুকেছেন, তাঁরা আদতে বিজেপি কর্মী, ঘটনার পর ঘরছাড়া ছিলেন। তাঁরাই রাজকুমার সহ তিনজনকে মেরে ফেলেছেন বলে দাবি করে তাঁদের দিকে ছুটে যান অনেকে।

ভূপতিনগরের পরিস্থিতি এদিন কার্যত পুলিশের হাতের বাইরে চলে যায়। তৃণমূলকর্মীরা দাবি করেন, ওই বিজেপি কর্মীদের মধ্যে কয়েকজন গ্রামের বাসিন্দাই নন। তাঁদের দিকে কার্যত মারতে ছুটে যান তৃণমূল কর্মীরা। গণপিটুনির মতো পরিস্থিতি যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে সেই বিজেপি কর্মীদের সরিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ।

গ্রামবাসীদের কেউ কেউ বলেন, 'এরাই বোম ফিট করে মেরেছে।' আবার কেউ বলেন, 'সন্দেহ আমাদের বরাবরই ছিল। আমরা ভয়ে মুখ খুলতে পারিনি।' কেন তাঁদের নাম প্রথম থেকে সামনে আসেনি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।


এদিকে নিহতের স্ত্রী ঘটনার পর এক রমক বয়ান দেন, পরে আর এক রকম। প্রথমে বাজি কারখানার কথা না বলা হলেও পরে তিনি দাবি করেছেন, তাঁর বাড়িতে বাজি কারখানা ছিল, সেখানেই আগুন লেগে বিস্ফোরণ হয়।

আবার বাজি কারখানার কথা জানতেন না এলাকার অন্যান্য লোকজন। অনেকেই বলছেন, বাজি কারখানার কথা তাঁরা নাকি শোনেনি কখনও।

শাসক বিরোধী চাপান-উতোর চলছে ভূপতিনগরে। বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতির মন্তব্য, তৃণমূল কোনও রাজনৈতিক দল নয়, এটি সন্ত্রাসবাদী দল। নীচ থেকে উপর পর্যন্ত সন্ত্রাসে মদত দেয় এরা। পঞ্চায়েত দখল করার জন্য এই কাজ করছে।