
পূর্ব মেদিনীপুর: সম্প্রতি একাধিক জেলায় ব্লক সভাপতি বদল করেছে তৃণমূল। এরমধ্যে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের ১৩টি। এ জেলায় ২৫টি ব্লক, ১৩টিতে মুখ বদল মানে অর্ধেকেই বদল। তবে এই বদলের খবর সামনে আসতেই দলের অন্দরে ক্ষোভের ছবিও দেখা গিয়েছে। ভাবমূর্তি, সাংগঠনিক দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও গ্রহণযোগ্যতার নিরিখে এই রদবদল হয়েছে বলে তৃণমূলের অন্দরের খবর। এতে সংগঠন আরও মজবুত হবে বলেই দাবি তাদের। কিন্তু পদ খুইয়ে কেউ কেউ বিদ্রোহও শুরু করছেন।
খেজুরি-১ ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরানোর পরই বিমান নায়েকের ফেসবুকে দেখা যায় ‘গুডবাই পলিটিক্স’ লেখা। বিমান নায়েক জানান, তাঁর কাজে যে দল সন্তুষ্ট নয় এরকম কোনও বার্তা তাঁকে কেউ দেয়নি কখনও। ব্যক্তিগত কারণে এই পোস্ট বলেও জানান বিমান।
গত ১৭ তারিখ বিকালে বিজেপি সিপিএমের থেকে ১০০ জনের বেশি মানুষের যোগদান করিয়ে খেজুরির বুকে মাস্টারস্ট্রোক দেন খেজুরি-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি শ্যামল মিশ্র। সেদিনই রাতে বাড়ি ফিরে শোনেন তিনি আর ব্লক সভাপতি নেই। তাঁর গলায় আক্ষেপের সুর, সেই বাম আমল থেকে খেজুরিতে লড়াই করে এসেছেন। দল যা ভাল বুঝেছে সেটাই করেছে। বলেন, “এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।”
কাঁথি সাংগঠনিক জেলায় ৮টি ব্লকে এবং তমলুক সাংগঠনিক জেলায় ৫টি ব্লকে নতুন মুখ আনা হয়েছে। কাঁথি সাংগঠনিক জেলায় ব্যাপক রদবদল করেছে তৃণমূল। খেজুরি-১ ও ২ চণ্ডীপুরের ব্লক সভাপতিদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পটাশপুর-১ ও ২, কাঁথি-১ এবং রামনগর-১ ও ২ ব্লক সভাপতিদের জায়গায় নতুন মুখ আনা হয়েছে। প্রার্থী যেই হোক কাঁথি লোকসভাকে নিজেদের দখলে রাখতে ব্যাপক রদবদল বলে দলীয় সূত্রে খবর।
গত পঞ্চায়েত ভোটে কাঁথি-১ ব্লকে তৃণমূলের ফলাফল সন্তোষজনক ছিল না। এরপর থেকেই ব্লক সভাপতি বদল নিয়ে আলোচনা চলছিল দলের অন্দরে। কাঁথি-১ ব্লক সভাপতি গণেশ মহাকুড়কে বদলে সুনীতকুমার পট্টনায়েককে এবার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। চণ্ডীপুর ব্লকে স্নেহাংশুশেখর পণ্ডিতকে সরিয়ে নতুন সভাপতি করা হয়েছেন সুনীল প্রধানকে।
রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরির বিধানসভা এলাকাতেও বদল হয়েছে। রামনগর-১ ব্লকে নতুন সভাপতি হয়েছেন উত্তমকুমার দাস। তবে এই ব্লকের সভাপতি নিতাই সার এবার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হয়ে যাওয়ায় তাঁকে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
এই রদবদল নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি পীযূশ পাণ্ডা বলেন, ” সমস্ত ব্লক সভাপতি, নতুন এবং পুরনোদের নিয়ে বৈঠক করেছি। এতে সংগঠন আরও মজবুত হবে।” পাল্টা বিজেপির তমলুক জেলা সহসভাপতি প্রলয় পাল বলেন, “মাথার চুল কালো থেকে সাদা না হওয়া পর্যন্ত পদ ধরে থাকেন অনেকে। সেটা বাঞ্চনীয় নয়। ওটা ওদের দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে ভাল সব রাজনৈতিক দলের এমন পরিবর্তন হওয়া দরকার।”