অ্যাম্বুল্যান্স তুমি কার? কাঁথি পুরসভা বনাম অধিকারীদের দড়ি টানাটানি

সৈকত দাস |

Jul 05, 2021 | 5:57 PM

Dibyendu Adhikari: "আমি কাঁথিবাসী হিসেবে আমার নৈতিক কর্তব্য করেছি। আগামী দিনেও এমন কাজ করে যাব।"

অ্যাম্বুল্যান্স তুমি কার? কাঁথি পুরসভা বনাম অধিকারীদের দড়ি টানাটানি
অলংকরণ: অভীক দেবনাথ

Follow Us

পূর্ব মেদিনীপুর: একুশের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মূল লড়াই ছিল অধিকারী বনাম তৃণমূলের। কালীঘাটের থেকে দূরত্ব বাড়িয়ে প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) বিজেপি যোগদানের পরপরই শুরু এই বিরোধ। এর পর নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারানো থেকে বিধানসভায় শুভেন্দুর বিরোধী নেতা হওয়া, সব মিলিয়ে অধিকারী পরিবারের সঙ্গে তৃণমূলের বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে বারবার। কিছুদিন আগে কাঁথি পুরসভা থেকে ত্রিপল লুঠ নিয়ে এফআইআর হয় শুভেন্দুর বিরুদ্ধে। এবার দিব্যেন্দু অধিকারী বনাম কাঁথি পুরসভার তরজা প্রকাশ্যে। সৌজন্যে একটি অ্যাম্বুল্যান্স।

শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি যোগ দেওয়ার অব্যবহিত পর কাঁথি পুরসভার প্রশাসক পদ থেকে সরতে হয় বাড়ির ছোট ছেলে সৌমেন্দু অধিকারীকে। নানা রাজনৈতিক বিতর্কের মাঝে আবারও পরিষেবা, উন্নয়নে এবং দায়বদ্ধতা নিয়ে অধিকারী ও কাঁথি পুরসভার মধ্যে দড়ি টানাটানি শুরু হল। ঠিক কী ঘটেছে এবার?

জানা গিয়েছে, তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী গত বছরের ৫ জানুয়ারি ইন্ডিয়ান অয়েল কর্তৃপক্ষের এক্সেকিউটিভ ডিরেক্টর একটি চিঠি দেন। সেই চিঠিতে তিনি কাঁথি মহকুমায় জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়ক, পর্যটন কেন্দ্র এবং ফিশিং হারবার রয়েছে ও দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকার জন্য একটি অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য আবেদন করেন। জানানো হয়, এই ট্রমা অ্যাম্বুল্যান্সের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে থাকবে কাঁথি পুরসভা।

সাংসদের সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত জেলা শাসকের মাধ্যমে কাঁথি পুর প্রশাসককে গত ২ জুলাই একটি ট্রমা অ্যাম্বুল্যান্স প্রদান করে। এখন এই অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়ার কৃতিত্ব কার তাই নিয়ে শুরু হয়েছে অধিকারী বনাম পুরসভার লড়াই।

একদিকে এই অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা দেওয়া বা পাওয়ার ক্ষেত্রে অধিকারীদের কোনও কৃতিত্বই দিতে নারাজ কাঁথি পুরসভার বর্তমান প্রশাসক সিদ্ধার্থ মাইতি। তাঁর কথায়, “আমরা বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় দেখছি উনি (পড়ুন দিব্য়েন্দু অধিকারী) বলছেন যে এই অ্যাম্বুলেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে সাংসদ হিসাবে ওনার প্রচেষ্টা রয়েছে। কিন্তু বাস্তব হল আমাদের উনি সাহায্য করেননি। স্বয়ং জেলা শাসক ইন্ডিয়ান অয়েল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আমাদের এই অ্যাম্বুল্যান্স প্রদান করেছেন। কিছু কাজ বাকি রয়েছে। শেষ হলেই দ্রুত এই পরিষেবা পাবেন এলাকাবাসী। ওনার ভূমিকা ছিল কিনা আমার জানা নেই। কিন্তু আমারাই চিঠি দিয়েছিলাম এবং জেলাশাসকের মাধ্যমে অ্যাম্বুল্যান্স পেয়েছি।”

কাঁথি পুর প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য সুবল মান্না আবার জানাচ্ছেন, দিব্যেন্দুবাবু এই ট্রমা অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা দেওয়ার জন্য চেষ্টা করেছিলেন বটে। কিন্তু তাঁর সেই প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ হয়নি। তিনিই বর্তমান পুর প্রশাসককে বলেকয়ে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।

যদিও এই সমগ্র পুরো বিষয় নিয়ে রাজনীতির রং না দেখার আর্জি জানিয়েছেন তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। Tv9 বাংলাকে তিনি জানান, “রাজনীতি নয়, কাঁথির মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে নিয়ে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্তৃপক্ষকে আমি চিঠি পাঠাই। যাতে দিঘা, শংকরপুর, তাজপুর, মন্দারমনির মতো পর্যটন এলাকা ও ফিসিং হারবার, দিঘা মোহনা, পেটুয়াঘাট মৎস্য বন্দর, রাজ্য সড়ক এবং ১১৬ বি জাতীয় সড়কের মতো দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকায় এই অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা মানুষ পান, তারই প্রচেষ্টা করেছি।”

আরও পড়ুন: বিজেপি বিধায়ককে ‘গো ব্যাক স্লোগান’! রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত সোনামুখী

তবে কাঁথি পুরসভা কৃতিত্ব দিল কিনা দিল তা নিয়ে তাঁর কিছু যায় না আসে না বলে মন্তব্য় করেন তিনি। বলেন, “আমি কাঁথিবাসী হিসেবে আমার নৈতিক কর্তব্য করেছি। আগামী দিনেও এমন কাজ করে যাব।”

Next Article