পূর্ব মেদিনীপুর: জেলায় জেলায় করোনার গ্রাফ উর্ধমুখী। আর সেই অতিমারিতে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নেমে পড়েছে টাকা লুটের খেলায়। এমনই এক ঘটনার অভিযোগ উঠল পূর্বমেদিনীপুরে কাঁথির (Contai) একটি বেসরকারি ল্যাবেরটরিতে। ভুয়ো আরটিপিসিআর টেস্টের (RTPCR Test) রিপোর্ট দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা রোজগারের অভিযোগ উঠল শহরের বেসরকারি ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। Tv9 বাংলার মাধ্যমে সেই খবর দেখে তড়িঘড়ি ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিলেন জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক সুব্রত সাহা ও কাঁথি মহকুমা শাসক বিক্রম হিরানি।
ঠিক কী ঘটেছে?
কর্মসূত্রে ভিনরাজ্যে যাবেন বলে গত শনিবার কাঁথি মুগবেড়িয়ার কাছে এক বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে আরটিপিসিআর টেস্ট করান এক ব্যক্তি। টেস্টের খরচ নেওয়া হয় ১,৮০০ টাকা। বলা হয়, সোমবার সকাল সাড়ে ৯ টায় রিপোর্ট পাওয়া যাবে। সেই মতো এদিন সকালে ল্যাবে গিয়ে নিজের রিপোর্ট সংগ্রহ করেন এদিন ওই ব্যক্তি। কিন্তু রিপোর্টে খুঁটিয়ে দেখে তাঁর নজরে আসে কিউআর কোড নেই। বিষয়টি তিনি তখনই জানালে ল্যাবরেটরি থেকে বলা হয়, এতে কোনও সমস্যা নেই। পরে ওই ব্যক্তি ই-পাসের জন্য যখন এই রিপোর্ট অনলাইনে জমা করেন তা আটকে যায়। আর তার পরেই নজরে আসে কাঁথির ওই ল্যাবরেটরির কাণ্ড।
জানা যায়, ওই ল্যাব মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি ল্যাবের থেকে স্যাম্পেল টেস্ট করিয়ে এনে দেয়। সেই মতো ওই ব্যক্তি টেস্ট করতে স্যাম্পল দেন ওই ল্যাবে। কিন্তু অন্যের টেস্ট রিপোর্ট কম্পিউটারের মাধ্যমে নকল করে দিয়ে দেওয়া হয়েছে এই ব্যক্তিকে। বিষয়টি সামনে আসতেই কার্যত হুলুস্থুল শুরু হয়।
সেই আরটিপিসিআর রিপোর্ট
যদিও ল্যাব কর্তৃপক্ষ তরফে এক কর্মী সাফ জানান, তাঁরা কোনওভাবে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নন। নিয়ম মেনেই টেস্ট হয়েছে। যদিও টেস্ট রিপোর্ট নিয়ে কোনও ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
এর মধ্যে খবর পৌঁছয় জেলার উর্ধ্বতন মহলে। কাঁথির পুর নোডাল অফিসার চিকিৎসক অনুতোষ পট্টনায়েক এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানান, এই প্রথম এই রকম ঘটনার কথা শুনলেন তিনি। যদিও কাঁথির মহকুমা শাসক ও জেলা স্বাস্থ্যে আধিকারিককে বিষয়টি জানান তিনি। বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে মহামারি আইনে শাস্তির ব্যবস্থা হবে। অনুতোষবাবুর কথায়, “বাংলার এই বিপদের সময় কিছু মানুষ ঝোঁপ বুঝে কোপ মারার জন্য ব্যস্ত রয়েছে। আমি মহকুমা শাসক কে অনুরোধ করব যেন এদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়।” পূর্ব মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্যে কর্মাধক্ষ পার্থ প্রতিম দাস এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে খোঁজখবর নিচ্ছেন বলে জানান। এসবের পর খবর পৌঁছয় মহকুমা শাসকের কানে।
Tv9 বাংলার মাধ্যমে অভিযোগের তথ্য খতিয়ে দেখে তদন্তের নির্দেশ দেন জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক সুব্রত সাহা ও কাঁথি মহকুমা শাসক বিক্রম হিরানি। গঠিত হয়েছে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি। কাঁথির কোভিড নোডাল অফিসার চিকিৎসক অনুতোষ পট্টনায়েক ও কাঁথি হাসপাতালের সুপার রজত পাল এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন বলে খবর।