
মহিষাদল: বাড়িতে শুধু স্বামী, স্ত্রী থাকতেন। সকাল থেকে তাঁদের কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। দুপুরে প্রতিবেশীরা বাড়ির ভিতর উঁকি দিতেই চমকে যান। বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন মহিলা। আর তাঁর স্বামী গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে বৃদ্ধ দম্পতির দেহ উদ্ধার করেন। ঘটনাটি পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল থানার রমণী মোহন মাইতি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাউকুন্ডু এলাকার। মৃতদের নাম মোহন হাজরা(৭০) এবং লক্ষ্মী হাজরা(৬৫)।
বাড়িতে শুধু বৃদ্ধ দম্পতিই থাকতেন। বছর ২৫ আগে তাঁদের একমাত্র সন্তান জলে ডুবে মারা যায়। তখন তার বয়স ছিল ৫ বছর। প্রতিবেশীরা বলছেন, তারপর থেকেই লক্ষ্মী হাজরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। মোহন হাজরা অত্যধিক মদ্যপান শুরু করেন। মোহন হাজরারা তিন ভাই। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁর এক ভাইপো বাড়ির জানালা দিয়ে দেখেন, বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন লক্ষ্মী হাজরা। আর পাশেই ঝুলছেন মোহন হাজরা। খবর পেয়ে মহিষাদল থানার পুলিশ দেহ দুটি উদ্ধার করে মহিষাদলের বাসুলিয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকরা বৃদ্ধ দম্পতিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মৃতের দাদা মদন গোপাল হাজরা বলেন, “আমার ভাই ও বৌমা প্রতিদিন ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে পড়ে। এদিন সকাল থেকে বাড়িতে তালা দেওয়া ছিল। দুপুরে দেহ উদ্ধার হয়।” মদন গোপাল হাজরার পুত্রবধূ সবিতা হাজরা বলেন, “দুপুর পর্যন্ত কাকিমারা কেউ বাড়ির বাইরে বের হননি। আমার শাশুড়ি আমার স্বামীকে বলেন, কাকুর বাড়িতে গিয়ে একবার দেখে আসতে। তখন আমার স্বামী কাকুর বাড়িতে গিয়ে দেখেন, বাড়িতে তালা লাগানো। জানালা দিয়ে আমার স্বামী দেখেন, কাকিমা বিছানায় পড়ে রয়েছেন। আর কাকু গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন।” প্রতিবেশীদের অনুমান, স্ত্রীকে খুন করে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন মোহন হাজরা।
রমণী মোহন মাইতি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শুভেন্দু হাজরা বলেন, “মদম গোপাল হাজরার পরিবার মৃতদেহ দেখতে পাওয়ার পরই আমাকে ফোন করেছিল। আমি সঙ্গে সঙ্গে মহিষাদল থানায় জানাই। পুলিশ এসে তালা ভেঙে দেহ দুটি উদ্ধার করে।” কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা তদন্ত করে দেখছে মহিষাদল থানার পুলিশ।