
কাঁথি: পাকিস্তানের জেলে মৃত্যু হল পূর্ব মেদিনীপুরের এক মৎস্যজীবীর। মৃতের নাম স্বপন রানা। পাকিস্তানের জেলে তাঁর মৃত্যুর কারণ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে পরিবার। আগামী ৪ ডিসেম্বর পাকিস্তান থেকে মৃতদেহ ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে। মৎস্যজীবীর মৃতদেহ গ্রামের বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে তৎপর হয়েছে প্রশাসন। মৃতের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় মৎস্যজীবী সংগঠন।
স্বপন রানার বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের উত্তর কাঁথি বিধানসভা এলাকার বামুনিয়া অঞ্চলের পাইকবার গ্রামে। কর্মসূত্রে তিনি থাকতেন গুজরাটে। সেখানে একটি ট্রলার মালিকের অধীনে ট্রলারে মাছ ধরতে যেতেন। তাঁর পরিবারের বক্তব্য, মাছ ধরতে গিয়েই ভুল করে তাঁদের ট্রলার ভারতীয় সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের সীমানায় ঢুকে পড়েছিল। পাকিস্তানের পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন। এরপর দীর্ঘ দুই বছর বন্দিদশায় থাকার পর হঠাৎ তাঁর মৃত্যুসংবাদ পৌঁছায় বাড়িতে।
পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি, স্বপন রানার মৃত্যুর কারণ এখনও পরিষ্কার নয়। বন্দিদশায় তাঁর চিকিৎসা, নিরাপত্তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও তথ্য নেই। ফলে মৃত্যুকে ঘিরে উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। মৃতের স্ত্রী টুটুরানি রানা বলেন, “গুজরাটে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন আমার স্বামী। এখন খবর এসেছে পাকিস্তানের জেলে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আমরা চাই মৃতদেহ গ্রামে আনা হোক।”
বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, পাকিস্তানের তরফে ভারতীয় বন্দিদের যে তালিকা দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে জেলে শারীরিক অসুস্থতার জেরে মৃত্যু হয়েছে স্বপন রানার। আগামী ৪ ডিসেম্বর ওয়াঘা সীমান্তে ভারতীয় সেনার হাতে তুলে দেওয়া হবে ওই মৎস্যজীবীর মৃতদেহ।
এদিন জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারকে স্বপনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়। প্রশাসন জানিয়েছে, সরকারি উদ্যোগে মরদেহ দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে কূটনৈতিক পথেই দেহ ফেরানো হচ্ছে।
এই দুঃসময়ে পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা মৎস্যজীবী উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান আমিন সোহেল। তিনি স্বপন রানার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সাহায্য ও সর্বতোভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। মৎস্যজীবীর মৃত্যুতে পাইকবার গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। প্রতিবেশীদের কথায়, “পরিশ্রমী, শান্ত মানুষ ছিলেন স্বপন। এমন অস্বাভাবিক মৃত্যু সংবাদ মানা কঠিন।”