Job Fraud: সরকারি দফতরের সিঁড়ির তলায় নেওয়া হত ইন্টারভিউ! ২০ লক্ষ খুইয়ে থানার দ্বারস্থ চণ্ডীপুরের সঞ্জীব
Job Fraud: অভিযোগ, ইন্টারভিউ নেওয়ার জন্য ডাকা হত কলকাতায়। ময়ূখ ভবন বা বিকাশ ভবনের মতো সরকারি দফতরের অফিসে নিয়ে যাওয়া হত। সেখানে কোনও অফিসারের সঙ্গে যোগসাজশ করে সিঁড়ির তলায় বা কোথাও দাঁড়িয়ে নেওয়া হত ইন্টারভিউ!

চণ্ডীপুর: বিজ্ঞাপনের পাশেই ছিল বিশ্ব বাংলার লোগো। সরকারি দফতরে চাকরির বিজ্ঞাপন। বেকারত্বের জ্বালায় হন্যে হয়ে ঘুরতে থাকা সঞ্জীব মাইতি দেখেই ভেবে নেন, এই সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না। তারপর মেসেজে কথোপকথন, ফোনে যোগাযোগ। সোজা কলকাতায় চলে আসেন পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের চণ্ডীপুরের বাসিন্দা সঞ্জীব। তবে চাকরি তো দূরের কথা! সেই চাকরির আশা যে তাঁকে এতবড় বিপদের মুখোমুখি দাঁড় করাবে, তা বোধ হয় কল্পনাও করতে পারেননি ওই ব্যক্তি। আপাতত ২০ লক্ষ টাকা খুইয়ে থানার দ্বারস্থ তিনি। চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কেও।
সঞ্জয় পণ্ডা নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। ২০১৮ সালে ফেসবুকে ওই বিজ্ঞাপন দেখার পর কলকাতার দমদমের বাসিন্দা সঞ্জয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল সঞ্জীবের। দমদমে দেখাও হয় ওই ব্যক্তির সঙ্গে। সঞ্জীব মাইতির অভিযোগ, সঞ্জয় তাঁকে বলেছিলেন, টাকা দিলেই সরকারি চাকরি হয়ে যাবে। আরও ৯ জন প্রার্থী ঠিক করে দিতে পারলে সঞ্জীবকে আর কোনও টাকাও দিতে হবে না। সরকারি চাকরি কে না চায়! তাই ৯ জনকে জোগাড় করতে কোনও অসুবিধাও হয়নি। অভিযোগ, প্রথমে ১ লক্ষ করে টাকা করে দেওয়ার পর ফর্ম পূর্ণ করানো হয় তাঁদের দিয়ে। সেই ফর্মেও ছিল বিশ্ব বাংলার লোগো। তারপর আরও ১ লক্ষ টাকা করে দিতে হয় প্রত্যেককে।
সঞ্জীব জানিয়েছেন, তাঁদের ইন্টারভিউ নেওয়ার জন্য ডাকা হত কলকাতায়। ময়ূখ ভবন বা বিকাশ ভবনের মতো সরকারি দফতরের অফিসে নিয়ে যাওয়া হত। সেখানে কোনও অফিসারের সঙ্গে যোগসাজশ করে সিঁড়ির তলায় বা কোথাও দাঁড়িয়ে নেওয়া হত ইন্টারভিউ! এরপর খুশি মনে অনেক আশা নিয়ে বাড়ি ফিরে আসতেন তাঁরা। এভাবেই চলছিল। শুধু তাই নয়, ওই অভিযুক্ত ব্যক্তি দাবি করেছিলেন, তৃণমূলের বড় নেতাদের সঙ্গে তাঁর সু সম্পর্ক রয়েছে, ফলে চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হবে না। কখনও করোনার অজুহাত তো কখনও ভোটের অজুহাতে চাকরির দিন ক্রমশ পিছিয়ে যেতে থাকে বলেও অভিযোগ।
কিন্তু তিন বছর কেটে যাওয়ার পর ২০২২ সাল থেকে সেই সঞ্জীব উধাও। ফোন ধরা তো দূরের ব্যাপার, তাঁর দমদমের ফ্ল্যাটে গিয়েও তাঁর দেখা পাওয়া যায়নি। বিপদে পড়েছেন বুঝে পুরো বিষয়টি জানিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছেন সঞ্জীব, চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকেও। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও সুরাহা হয়নি। তাই মহিষাদল থানায় ওই সব তথ্য় ও নথি সহ সঞ্জয় পণ্ডার নামে এফআইআর দায়ের করেছেন সঞ্জীব মাইতি।
মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী, প্রথমে এই অভিযোগে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাননি। তিনি জানান, কে কার সঙ্গে প্রতারণা করেছে, সে ব্যাপারে তাঁর কিছু জানা নেই। না জেনে তিনি কিছু বলবেন না। পরে আবার বিধায়ক দাবি করেন, অভিযোগকারী সঞ্জীব মাইতি বিজেপি কর্মী।
