
দিঘা: আর মাত্র কয়েকদিন বাদেই দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন হওয়ার কথা। মন্দির থেকে আলোকসজ্জা সবই প্রস্তুত। সৈকত শহরে সাজো সাজো রব। এরই মধ্যে রবিবার শোরগোল পড়ে যায় সেই এলাকায়। আস্ত এক জগন্নাথ মূর্তি এসে হাজির সমুদ্রের পাড়ে। বাঙালির জনপ্রিয় পর্যটনস্থল দিঘায় কোথা থেকে এল এমন একটি মূর্তি, তা নিয়ে শুরু হয়ে যায় প্রবল জল্পনা। মন্দির উদ্বোধনের আগে এ কোনও অলৌকিক ঘটনা নয় তো!
দিঘায় ওই মন্দির তৈরি হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে। তিনিই সেই মন্দির উদ্বোধন করবেন। তার আগে এমন মূর্তি ভেসে আসায় তৃণমূলের অনেক নেতা-নেত্রীই বলেন, ‘অনেকেই ঈশ্বরের ইচ্ছা বলেই মনে করছেন।’ কেউ বলছেন, ‘মন্দির উদ্বোধনের আগে সমুদ্র পথেই স্বয়ং এলেন প্রভু।’ সেই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পর অবশেষে সামনে এল আসল সত্যি।
রবিবার দিঘার মাইতি ঘাটের কাছে উদ্ধার হয় ওই জগন্নাথ মূর্তি। মুহূর্তে ছুটে যায় এলাকার লোকজন ও পর্যটকরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে সেই ছবি।
এবার জানা গেল, ওই জগন্নাথ মূর্তি এতদিন ধরে পূজিত হচ্ছিল দিঘা থানার খাদাল গোবরা গ্রামের বাসিন্দা কল্পনা জানার বাড়িতে। ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পর সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলেন সেই কল্পনা।
কল্পনার দাবি, তাঁর বাড়িতে যে মন্দির রয়েছে, সেখানেই পূজা হত জগন্নাথের। দূর্গা মন্দিরের সঙ্গেই জগন্নাথকে গত এক বছর ধরে পুজো করা হত। কল্পনা জানান, কিছুদিন আগে হঠাৎ তিনি দেখতে পান জগন্নাথ মূর্তির হাত ও মাথার অংশ ভাঙতে শুরু করেছে। তাঁর দাবি, ভাঙা মূর্তি মন্দিরে না রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন পূজারী। তাই মূর্তি কোথায় রাখবেন তিনি বুঝতে পারছিলেন না। বস্তির যে বাসিন্দারা তাঁকে ওই মূর্তি দিয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বললে, তাঁরা মূর্তি নিতে রাজি হননি। তাই রবিবার দুপুর ২ টো নাগাদ দিঘার সমুদ্রে ওই মূর্তি ভাসিয়ে দেন কল্পনা।
পরে সন্ধ্যায় মোবাইলে দেখেন ওই মূর্তির ছবি নিয়েই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এরপরই মুখ খুলেছেন কল্পনা। উল্লেখ্য, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার রবিবার এই বিষয়ে টুইট করেছিলেন। সেখানে তাঁর বক্তব্য ছিল, মূর্তির একটি হাত ভাঙা দেখা যাচ্ছে। আর হিন্দু ধর্মে ভাঙা মূর্তি ব্যবহার করা হয় না। তৃণমূল এই বিষয়টাকে রাজনৈতিক কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে বলেই দাবি সুকান্তর।