
শঙ্করপুর: দুয়ারে হাজির বর্ষা। আবহাওয়া দফতর পূর্বাভাসে জানিয়ে দিয়েছিল সোমবার থেকে বৃষ্টি শুরু হচ্ছে দক্ষিণবঙ্গে। তবে রবিবার সকাল থেকেই কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে মেঘলা আকাশ, কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আর বর্ষা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাঙালির নাকে ইলিশের গন্ধ আসতে শুরু করেছে। আর সমুদ্রেও পাড়ি দিয়ে দিয়েছেন মৎস্যজীবীরা।
রবিবার থেকেই ইলিশের সন্ধানে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দেওয়া শুরু করলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কয়েক হাজার মৎস্যজীবী। গত কয়েকদিন ধরেই পেটুয়া শঙ্করপুর সহ অন্যান্য মৎস্য বন্দরগুলিতে ছিল সাজো সাজো রব। নাওয়া-খাওয়া ভুলে মৎস্যজীবীরা নিজেদের ব্যস্ত রেখেছিলেন মাছ ধরার সরঞ্জাম গোছাতে। জাল তৈরি থেকে ট্রলার সংস্কারের কাজ চলেছে পুরোদমে।
মৎস্য দফতর সূত্রে জানা যায়, ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন- এই দু’মাস সময় পর্যন্ত মাছের প্রজননের জন্য গভীর সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি থাকে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর আবার মাঝ সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে শুরু করেছেন মৎস্যজীবীরা।
গভীর সমুদ্রে যাওয়া মৎস্যজীবীদের সুরক্ষায় সমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। প্রশাসনের তরফ থেকে বিপদ সঙ্কেত যন্ত্র ও প্রতিটি ট্রলারে লাইফ জ্যাকেটের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। গভীর সমুদ্রে যদি মৎস্যজীবীরা কোনও বিপদে পড়েন তাহলে ‘ইসরো'(ISRO)-র নয়া প্রযুক্তির মাধ্যমে মৎস্যজীবীদের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে। শুধু তাই নয়, কোথায় বেশি মাছ রয়েছে সেটাও ওই নয়া প্রযুক্তির মাধ্যমেই দেখতে পাবেন মৎস্যজীবীরা। তবে সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনেই মৎস্যজীবীরা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে পারবেন।
ইলিশ ধরার বেশ কিছু নিয়মও আছে। যেমন জালের ফাঁস ৯০ মিলিমিটার হতে হয়, ২৩ সেন্টিমিটারের ছোট মাছ ধরা যায় না। মৎস্যজীবীদের বারবার অনুরোধ করা হয়েছে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার সময় ভারতীয় নৌবাহিনী ও উপকূলরক্ষীবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে। বিপদে পড়লে পৌঁছে যাবে উপকূলরক্ষী বাহিনী ও নৌবাহিনী।
গত বছর তেমনভাবে মাছের দেখা পাওয়া যায়নি। এবছর লাভ হবে, এমন আশাই দেখছেন মৎস্যজীবীরা। জেলার সহ মৎস্য অধিকর্তা সুমন সাহা জানিয়েছেন দিঘা মোহনা ও শঙ্করপুরের মতন শৌলা সহ বাকি মাছ ধরার জায়গাগুলিতে ড্রেজিং করার কথা ভাবা হচ্ছে।