পূর্ব মেদিনীপুর: পঞ্চায়েত ভোট যত এগিয়ে আসছে, রাজনৈতিক উত্তাপ তত বাড়ছে। চলছে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ। এবার বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari) হুঁশিয়ারি দিলেন যুব তৃণমূল নেতা সুপ্রকাশ গিরি। নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ককে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বললেন, CRPF সঙ্গে না থাকলে শান্তিকুঞ্জ থেকে বিরোধ দলনেতাকে বেরতে দেবেন না তাঁরা। একই হুঁশিয়ারি দিতে শোনা গেল রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাকে।
শনিবার বিকেলে রামনগরের ত্রিকোণ মোড়ে সভা করে তৃণমূল। ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ, মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। সভায় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী অখিল গিরি, যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি, জেলা চেয়ারম্যান অভিজিৎ দাস, জেলা তৃণমূলের সভাপতি তরুণ মাইতি, নিতাই সার,তরুণ জানা-সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা।
এদিন শুভেন্দু-সহ বিজেপির নেতাদের তুলোধনা করেন মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। তিনি বলেন, “রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী আমরা যে জায়গায় থাকি না কেন আমাদের প্রত্যেকের একটা সম্মান পাওয়ার অধিকার আছে। রাষ্ট্রপতির সম্পর্কে অখিল গিরির অশোভন মন্তব্যের জন্য আমাদের মুখ্যমন্ত্রীও ক্ষমা চেয়েছেন। ক্ষমা চাইতে গেলে জনদরদি হতে হয়। যা আমাদের মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু আমাদের সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করেও ক্ষমা চাননি শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপির লোকেরা প্রচার করে বেড়াচ্ছে আমরা বীরবাহা হাঁসদাকে বলিনি। ওদের লজ্জা থাকা দরকার। আমার-আপনার মতো সাধারণ মানুষের জন্য ওদের চোখে জল পড়ে না। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনে এদের তাড়িয়ে দিতে হবে।”
পাশাপাশি শুভেন্দুকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বীরবাহা বলেন, “আমার বিধানসভায় আপনাকে দু’বার ঢুকতে দিইনি। আপনি আমাকে বাচ্চা বলেছেন। যদি ক্ষমতা থাকে জায়গা সময় বলুন লড়াই করতে প্রস্তুত আছি। বাচ্চা বলে যে ভুলটা আপনি করছেন সেটা ভাঙাব। সিপিএম আমলে অনেক রক্ত দেখে বড় হয়েছি। আমি লড়াই করে এসেছি। আমি আপনার মতো বেইমানি করে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করিনি। তাই আপনি জায়গাটা বলবেন আমি একা যাব আপনার সঙ্গে লড়াই করতে।” লড়াইয়ের বার্তা দিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে ঘরবন্দি করে রাখার বার্তাও দলীয় কর্মী-সমর্থকদের দেন তিনি।
বীরবাহার মতোই শুভেন্দুকে তীব্র আক্রমণ করেন সুপ্রকাশ। বলেন, “৪ গাড়ি CRPF নিয়ে ঘুরে বেড়ান। CRPF সরিয়ে নিন, আপনাকে শান্তিকুঞ্জের বাইরে বেরতে দেব না।” সুপ্রকাশ আর বলেন, “আমাকে বলেছে, আমি নাকি আগে পিছে পুলিশ নিয়ে ঘুরে বেড়াই। যদি দেখাতে পারেন, আর কোনওদিন রাজনীতির ময়দানে আসব না। কিন্তু, আপনি পুলিশ ছাড়া এক মুহূর্তের জন্যও মাটিতে পা রাখতে পারবেন না।”
তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “আমরা উন্নয়নের রাজনীতি চাই। কিন্তু কেউ যদি কুৎসা করে আর চোখ রাঙিয়ে কথা বলে তাকেও সমান ভাষায় জবাব দিতে হবে। চারটে বললে আটটা ফেরত যাবে। চমকে ধমকে কেন্দ্র দেখিয়ে রাজনীতি করতে দেব না বাংলায়। সবক’টি পঞ্চায়েত জিতে আসতে হবে। কোথাও যেন বিজেপির একজনও প্রার্থী না জেতে। কোনও হিংসা, অশান্তি নয়। উন্নয়নের ওপর ভিত্তিতে করে রামনগরকে বিরোধীশূন্য করতে হবে। সবকটি অঞ্চলে বিজেপিকে মুছে দিতে হবে। বুথে বুথে যান। ভুলত্রুটি থাকলে শুধরে নিন। কুৎসার রাজনীতি জিতবে না। দিনের শেষে জিতবে মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার। উন্নয়ের রাজনীতি।”