
গোপালপুর: শুক্রবার গভীর রাত। চুপিচুপি হোস্টেল থেকে বেরিয়ে তিনজন পড়ুয়া গিয়েছিল গাছ থেকে নারকেল চুরি করতে। এতেই হল কাল! নারকেল গাছ থেকে ডাব পাড়তে গিয়ে আচমকাই পড়ে মৃত্যু হল একজনের। খবরপেয়ে শনিবার ভোরের দিকে পটাশপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মৃতদেহটিকে উদ্ধার করছে। মৃত পড়ুয়ার নাম সৈকত রায় (১৪)। তাঁর বাড়ি গোকুলপুর অঞ্চলের আইমাগড়গড়িয়া গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে খবর, গোপালপুর অঞ্চলে অবস্থিত গোপালপুর ইউনিয়ান রাখাল বিদ্যালয়ের হোস্টেলে দীর্ঘদিন ধরেই প্রায় ১০০ জন ছাত্রছাত্রী থাকে। শুক্রবার গভীর রাতে হোস্টেলের তিন ছাত্র (তার মধ্য সৈকতও ছিল) চুপিসাড়ে হোস্টেল ছেড়ে বেরিয়ে স্কুলে চত্বরে অবস্থিত নারকেল গাছ থেকে ডাব চুরি করতে যায়।
এরপর একটি গাছে উঠেছিল সৈকত। আর নীচে দাঁড়িয়েছিল তাঁর দুই সহপাঠী। অন্ধকারের মধ্যেই গাছের অনেকটা উপরে যাওয়ার পর আচমকাই সেখান থেকে সটান নীচে পড়ে যায় সে। মাথায় গুরুতর চোট পেয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। ঘটনাটি দেখেই আতংকিত বাকী দুই ছাত্র হোস্টেলে পালিয়ে যায়। পরে তাঁদের কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ জানতে পেরেই স্কুল চত্বরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। খবর পেয়ে স্কুলের তরফ থেকে স্থানীয় পটাশপুর থানায় বিষয়টি জানানো হয়। সেই সঙ্গে মৃত ছাত্রের পরিজনকেও মর্মান্তিক ঘটনার খবর দেওয়া হয়।
এ দিন, ভোরের দিকে পটাশপুর থানার পুলিশ এসে ঘটনাস্থল গিয়ে মৃত ছাত্রের দেহটিকে উদ্ধারে নেমেছে। মৃতের পরিবারের তরফে প্রশ্ন উঠছে, গভীর রাতে স্কুল চত্বরে, স্কুল কর্তৃপক্ষ থাকাকালীন কীভাবে এই ঘটনা ঘটে? গোটা ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে দায়ি করছে মৃত ছাত্রের বাবা।
এই ঘটনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুনীল জানা বা হোস্টেল সুপার সঞ্জয় বসুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হলেও কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। তবে পটাশপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, স্কুলের গাছ থেকে পড়ে গিয়ে ছাত্র মৃত্যুর খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। দেহটিকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠানোর পাশাপাশি গোটা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
মৃতের মামা জানান, “রাত্রিবেলা উঠেছিল ডাব গাছে সেখান থেকে পড়ে গেছে। দুটো নাগাদ আমাদের হোস্টেল থেকে ফোন করে জানায়। আমরা ছুটে আসি। তারপর দেখি মৃতদেহ। ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ নিয়ে গেছে।”