
পূর্ব মেদিনীপুর: নামে ভুল রয়েছে, শুনেই আতঙ্কে BLO-র কাছে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ পাঁশকুড়ার ভোটারদের। তৃণমূল বিজেপির রাজনৈতিক তরজা। পশ্চিম পাঁশকুড়া বিধানসভার পাঁশকুড়া ব্লকের চৈতন্যপুর এক গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজয় রামচক এলাকার ১৭২ নম্বর বুথে প্রায় ৭০ জনের নামের অসঙ্গতি দেখা গিয়েছে। তাদের প্রত্যেককেই বিএলও ফোন করে তথ্যে নিয়ে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় আসার জন্য নির্দেশ দেয়। এলাকাবাসীরা তাঁদের নথি নিয়ে এসে রীতিমতো বিএলও-র কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
রাজ্যের অন্যান্য বিধানসভার মতোই পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভার বুথ গুলিতে চলছে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের যৌক্তিক অসঙ্গতির সংশোধনীর কাজ। খসড়া তালিকায় নাম থাকলেও হঠাৎ বুথ লেভেল অফিসার ফোন করে নথি নিয়ে ডাকায় রীতিমতো আতঙ্কে পড়ছেন ভোটাররা। যদিও প্রশাসনের দাবি, আতঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই ভোটারদের অসুবিধে যাতে না হয় তার জন্যই কাজ করছে নির্বাচন কমিশন।
এদিকে একই বুথের একাধিক ব্যক্তিকে ফের ডেকে পাঠানোয় পাঁশকুড়ার বিজয়া রামচক প্রাথমিক স্কুলে ক্ষোভ প্রকাশ এলাকার বাসিন্দারা। যদিও পরে অবশ্য বুথ লেভেল অফিসার বিষয়টি ভোটারদের বুঝিয়ে বলতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, গত পরশুদিন থেকে বিএলএ অ্যাপে সংযুক্ত হয়েছে লজিক্যাল ডিস্ক্রেপেনসির নামের একটি উইন্ডো।
যে সমস্ত ভোটারদের ২০০২ এর ভোটার তালিকায় এক নাম ছিল অথচ পরবর্তী কালে তারা নাম পরিবর্তন করেছেন তাদের ক্ষেত্রে অনেকেরই পুরনো নাম অ্যাপে দেখানো হয়েছে। ওই সমস্ত ব্যক্তির সঠিক নাম কি তাই বর্তমানে পুনরায় নথি দেখে তথ্য দিতে হচ্ছে বুথ লেভেল অফিসারকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, ২০০২ এর ভোটার তালিকা কোন ব্যক্তির নামের সাথে ছিল মল্লিক আলি। কিন্তু তিনি পরবর্তীকালে তা সংশোধন করে শুধু আলি রেখেছেন। সেক্ষেত্রে তার পুরনো নামে থেকে গিয়েছে। আবার ২০০২ সালের তালিকা অনুযায়ী অনেকের ক্ষেত্রেই মিডিল নেম ছিল। পরবর্তীকালে তারা পরিবর্তন করে তা তুলে দিয়েছেন অথবা ছোট খাটো বানানের ভুল রয়েছে। ওই সমস্ত ভোটারদের সমস্ত তথ্য সম্পূর্ণ নির্ভুল করতেই এই কাজ চালাচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
বিজয় রামচক প্রাথমিক বিদ্যালয় এসে ১৭২ নম্বর বুথের বিএলও অতনু জানার কাছে ক্ষোভ উগরে দেন ভোটাররা। ওই বুথের ৭৮৯ জন ভোটারের মধ্যে ২৯ জন ভোটার বাতিল হয়েছে মৃত্যু এবং স্থানান্তরিত হওয়ার জন্য। ৭৬ জনের নামে বিভিন্ন ভুল ত্রুটি রয়েছে। তারই সংশোধনের কাজ চলাকালীন এই অসন্তোষ তৈরি হয়।
সংশ্লিষ্ট বুথের বিএলও অতনু জানা বলেন, “আমার যে ভুল নয় তা ভোটারদের বোঝাতে পেরেছি। যেহেতু বর্তমানে আমি নির্বাচন কমিশনের হয়ে কাজ করছি তাই ওনারা আমার কাছেই অভিযোগ জানিয়েছেন। ভোটারদের নির্ভুল নাম রাখতেই এই কাজ চলছে।”
পাঁশকুড়া নগর মন্ডলের সভাপতি সুকুমার ভুঁইঞা বলেন, “সাধারণ মানুষ যাতে ভবিষ্যতে সমস্যায় না পড়েন তার জন্যই নির্বাচন কমিশন এই প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তৃণমূল সবেতেই রাজনিতি খোঁজে।”
তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজিত রায় অভিযোগ করে বলেন, “বিজেপিকে খুশি করতে নির্বাচন কমিশন একাধিক নতুন নতুন প্রদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে সাধারণ মানুষ নিশ্চিন্তে থাকুন ,কারণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোন ন্যায্য ভোটারকে তার অধিকার হারাতে দেবেন না। “